প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন। ফাইল ছবি।
আগামী রবিবার (২৮ মে) নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন কর্মসূচিতে যোগ দেবে না তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন। সেই কর্মসূচিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি বলে সোমবার অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে!
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার টুইটারে ডেরেক লিখেছেন, ‘‘সংসদ শুধুমাত্র একটি নতুন ভবন নয়, এটি একটি পুরানো ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, নজির এবং বিধিবদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিকতা। এটি ভারতীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী তা মানেন না। তাঁর জন্য, রবিবারের নতুন ভবনের উদ্বোধন হল ‘আমি, আমি, আমার’। তাই আমরা নেই।’’
প্রসঙ্গত, তৃণমূলই দেশের প্রথম দল যারা প্রকাশ্যে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন বয়কট করল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের পাশাপাশি অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)-ও সংসদ ভবন উদ্বোধন কর্মসূচি বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মঙ্গলবার। আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহ টুইটারে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদেই তাঁদের এই বয়কট।
সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সংসদের অভিভাবক হলেন রাষ্ট্রপতি। কারণ, সংবিধানের ৭৯ ধারায় বলা হয়েছে, সংসদ রাষ্ট্রপতি, লোকসভা ও রাজ্যসভা নিয়ে গঠিত। তাই তাঁরই উচিত নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করা। কিন্তু উদ্বোধন দূর অস্ত্, রবিবারের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি বলে অভিযোগ।
বিরোধীদের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নিজেই সব কৃতিত্ব নিতে উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি নিজে প্রচারের সব আলো শুষে নিতে চান। সেই কারণে উপেক্ষা করা হচ্ছে দেশের প্রথম আদিবাসী (তফসিলি জনজাতি) রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদীকে। আমন্ত্রণ পাননি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা দলিত সমাজের প্রতিনিধি কোবিন্দও। কংগ্রেস সভাপতি খড়্গের অভিযোগ, নতুন ভবনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতিকে উপেক্ষা করার এই ইতিহাস নতুন নয়। নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস হয়েছিল ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ সালে। কিন্তু সেই শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
পরবর্তী ধাপে ২০২২ সালের ১১ জুলাই যখন জাতীয় প্রতীক সিংহের ব্রোঞ্জের মূর্তির উদ্বোধন হয় তখনও আমন্ত্রিতের তালিকায় নাম ছিল না কোবিন্দের। যদিও সে সময়ও রাষ্ট্রপতির আসনে ছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে ২৮ মে দিনটি বিনায়ক দামোদর সাভারকরের ১৪০তম জন্মবার্ষিকী। বিরোধীদের অভিযোগ, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি, জওহরলাল নেহরুর জন্মদিবসকে উপেক্ষা করে সাভারকরের জন্মদিনকে সংসদ ভবনের উদ্বোধনের জন্য বেছে নিয়ে এক দিকে হিন্দুত্বের হাওয়া তুলতে, অন্য দিকে মহারাষ্ট্রের ভোটদাতাদের ‘বার্তা’ দিতে চাইছেন মোদী।