Kargil War

কার্গিলে ৪ পাক সেনা মরেছিল ওঁর গুলিতে, তিনি আজ ট্রাফিক সামলান

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ১৪:৩০
Share:
০১ ১২

হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় সেনাদের অভিযানে যেতে হয়েছিল সাধারণ উর্দিতে। তাঁদের সামনে দুটো পথ খোলা ছিল। হয়, শত্রু দমনে ভারী অস্ত্র নিতে হবে, নয় তো নিজেদের জন্য ভারী শীতবস্ত্র। এক সঙ্গো দুটো নিলে অতিরিক্ত ভারের জন্য পাহাড়ে উঠে পাক হানাদারদের তাড়ানো কঠিন হত। বহন করার জন্য তাই ওই ঠান্ডাতেও সেনারা বেছে নিয়েছিলেন অস্ত্র-ই।

০২ ১২

তাঁদেরই একজন ছিলেন সতপাল সিংহ। কার্গিল যুদ্ধে টাইগার হিল অভিযানে বীর সেনানী। এখন তিনি পঞ্জাব পুলিশের হেড কনস্টেবল। ব্যস্ত রাজপথে ট্রাফিক সামলান।

Advertisement
০৩ ১২

পঞ্জাবের সংগ্রুর জেলায় ভবানীগড় একটা ছোট্ট শহর। তার রাস্তায় যানবাহন সামলান সতপাল। কাছে গিয়ে তাঁর উর্দিতে চোখ রাখলে দেখা যায় মেডেল রিব্যান্ডের সারি। তার মধ্যে একটি তারা অর্ধেক নীল, অর্ধেক কমলা। অর্থাৎ তিনি ‘বীরচক্র’ সম্মানে ভূষিত।

০৪ ১২

পঞ্জাব পুলিশের কনস্টেবল, ‘বীরচক্র’ সতপাল সিংহ আজ থেকে কুড়ি বছর আগে ছিলেন কার্গিল যুদ্ধের সেনা। টাইগার হিল শৃঙ্গ অভিযানের অন্যতম সদস্য সতপালের হাতে প্রাণ গিয়েছিল ক্যাপ্টেন কারনাল শের খান-সহ মোট চার জন পাকিস্তানি সেনার।

০৫ ১২

কার্গিল যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে সতপাল জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁরা প্রথম পজিশন নিয়েছিলেন ১৯৯৯ সালের ৫ জুলাই। পাকিস্তানের তরফে প্রথম প্রত্যাঘাত এসেছিল ৭ জুলাই। ভারতীয় অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন সুবেদার নির্মল সিংহ।

০৬ ১২

মাথায় সরাসরি পাকিস্তানি সেনার বুলেট লেগে যুদ্ধের ময়দানে প্রাণ হারিয়েছিলেন সুবেদার নির্মল সিংহ। তাঁর মৃত্যুর পরে দ্রুত এগিয়ে এসেছিল পাকিস্তানি সেনা। শেষ অবধি দু’পক্ষের লড়াই হয় মুখোমুখি।

০৭ ১২

টাইগার হিল পুর্নদখলের অভিযানে মোট চার জন পাকিস্তানিকে হত্যা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন সতপাল সিংহ। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ক্যাপ্টেন কারনাল শের খান, তাঁর রেডিও অপারেটর এবং দুই জওয়ান।

০৮ ১২

সতপাল বলতে দ্বিধা করেননি যে, ক্যাপ্টেন খান অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ‘ফায়ার অ্যান্ড কভার’ পদ্ধতিতে আঘাত করছিলেন লাগাতার। সতপালের আক্রমণে তাঁর মৃত্যুর পরে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনা।

০৯ ১২

কিন্তু সতপাল সিংহ নিজে বিনিময়ে কী পেলেন? তাঁর প্রাক্তন ব্রিগেড কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার বাজওয়া জানিয়েছেন, তিনি সতপালের নাম মনোনয়ন করেছিলেন ‘পরমবীর চক্র’ সম্মানের জন্য। কিন্তু তিনি শেষ অবধি লাভ করেন ‘বীর চক্র’ সম্মান।

১০ ১২

সতপাল সিংহর সেনাবাহিনীর চাকরি শেষ হয় ২০০৯ সালে। পরের বছর তিনি যোগ দেন পঞ্জাব পুলিশে। তাঁর আক্ষেপ, তিনি ‘বীরচক্রের’ যোগ্য ও প্রাপ্য সম্মান পাননি। পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন এক্স সার্ভিসম্যান কোটায়। এখন তিনি হেড কনস্টেবল।

১১ ১২

সতপাল সিংহের আক্ষেপ, ক্রীড়জগতের পদকজয়ীদেরও তাঁর থেকে উঁচু পদ দেওয়া হয়। তাঁর হাতে নিহত পাকিস্তানি সেনা ভূষিত হয়েছে সে দেশের সাহসিকতার সর্বোচ্চ সম্মানে। কিন্তু তিনি নিজে এখন হেড কনস্টেবল। কাজের ফাঁকে দীর্ঘশ্বাস পড়ে ৪৬ বছর বয়সী প্রাক্তন সেনার।

১২ ১২

সর্বশক্তিমানের কাছে সতপালের একটাই প্রার্থনা, তাঁর সন্তানের ভবিষ্যৎ যেন তাঁর মতো না হয়। স্নাতকোত্তর ছেলে এখনও কর্মহীন। তাঁর কথা ভেবে উদ্বেগে আরও গভীর হয় কার্গিল যুদ্ধের সেনার কপালে ভাঁজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement