Kangana Ranaut

মাদক যোগে কঙ্গনা এ বার তদন্তের মুখে

মহারাষ্ট্রের শাসক দল শিবসেনা বনাম বিজেপি সমর্থিত কঙ্গনার লড়াই যে সহসা মিটছে না, শুক্রবার তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:২১
Share:

—ফাইল চিত্র।

মাদক যোগে তদন্ত শুরু হতে চলেছে বলিউডের অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের বিরুদ্ধে। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ শুক্রবার বিধানসভায় বলেন, কঙ্গনার প্রাক্তন প্রেমিক অধ্যয়ন সুমন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন— ‘‘২০১৬ সালে একটি পার্টিতে অভিনেত্রী নিজে কোকেন নিয়েছেন, তাঁকেও নেশা করার জন্য পীড়াপীড়ি করেছেন। এর তদন্ত হবে।’’ এর পরেই মহারাষ্ট্র সরকার চিঠি দিয়ে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয় মুম্বই পুলিশকে। পুলিশ সূত্রে খবর, নির্দেশ মেনে তারা অচিরেই তদন্ত শুরু করছে। কঙ্গনা ও অধ্যয়নকে তলব করা হতে পারে।

Advertisement

মহারাষ্ট্রের শাসক দল শিবসেনা বনাম বিজেপি সমর্থিত কঙ্গনার লড়াই যে সহসা মিটছে না, শুক্রবার তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। শিবসেনার প্রবীণ নেতা ছগন ভুজবল দলের কিছুটা সমালোচনা করেই আজ বলেন, ‘‘কঙ্গনার মন্তব্য নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া না-দেখালেই ভাল হত। লোকে তার কথা ভুলে যেত।” কিন্তু কঙ্গনা যে নিজেই বিষয়টিকে মেটাতে রাজি নন, বরং কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে আক্রমণ করে ঘটনায় জাতীয় রাজনীতির রং দিতে চান, তা পরিষ্কার। কালই তিনি শিবসেনাকে ‘সনিয়া-সেনা’ তকমা দিয়ে সে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার পরেও কংগ্রেস সভানেত্রী প্রতিক্রিয়া না-জানানোয় খোলাখুলি সনিয়াকে আক্রমণ করে আজ টুইট করেন কঙ্গনা। তার আগেই হিমাচলপ্রদেশের মানালিতে অভিনেত্রীর মা আশা রানাউত কঙ্গনাকে ‘পাশে দাঁড়ানো’র জন্য বিজেপি দল, নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তার পরেই কঙ্গনা এক ঝাঁক টুইটে সনিয়াকে আক্রমণ করেছেন। কঙ্গনার অভিযোগ, মহারাষ্ট্র সরকারে কংগ্রেসও শরিক। ‘তাঁর আদর্শ পুরুষ’ বালসাহেব ঠাকরের শিবসেনা এখন আর ‘সেই শিবসেনা’ নেই। ক্ষমতার জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে আদতে কংগ্রেস-ই হয়ে গিয়েছে। তাই ‘সরকারের হাতে তাঁর হেনস্থা’র জন্য আসলে সনিয়াই দায়ী।

রাজ্যে সরকারের শরিক এনসিপি নেতা শারদ পওয়ার যদিও বিষয়টিকে কঙ্গনা বনাম মহারাষ্ট্র সরকারের লড়াই বলতে নারাজ। আজ তিনি বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণের জন্য বৃহন্মুম্বই পুরসভা অভিনেত্রীর দফতর ভাঙতে গিয়েছিল। এ জন্য আরও সময় দেওয়া উচিত ছিল কি ছিল না, সেটা অন্য প্রশ্ন। কিন্তু রাজ্য সরকারের উপরে দায় চাপানোটাও ঠিক নয়। এটা পুরসভার বিষয়। আর ওই অভিনেত্রী সনিয়াকে আক্রমণ করে টুইট করে চলেছেন!’’ মহারাষ্ট্রে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস কঙ্গনার বিরুদ্ধে উদ্ধব সরকারের আচরণের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘করোনার সঙ্গে লড়াই না-করে রাজ্য সরকার কঙ্গনার সঙ্গে লড়াই করছে। দাউদের বেআইনি বাড়ি ভাঙার সাহস নেই, এরা এক বেচারি মহিলার বাড়ি ভাঙতে উঠেপড়ে লেগেছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মতান্তরও রয়ে গেল, পাঁচটি বিষয়ে ঐকমত্য মস্কো-বৈঠকে​

আরও পড়ুন: রদবদল কংগ্রেসে, রাহুলের ইচ্ছে মেনেই​

বিজেপির শরিক দলের নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আটওয়ালে আজ রাজ্যপালের কাছে গিয়ে কঙ্গনার দফতর ভাঙার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী অনিল পরব বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হবে না, এটাই কি চান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী?’’ এর পরে আটওয়ালে বলেন, ‘‘কঙ্গনার উচিত বিজেপিতে যোগ দেওয়া।”

সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পরে মুম্বইয়ে ‘বহিরাগত’ শিল্পীদের বিদ্বেষের শিকার হতে হয় অভিযোগ করে একের পর এক সহকর্মীকে আক্রমণ করে চলেছিলেন কঙ্গনা। লকডাউন মানালিতে কাটিয়ে বুধবার মুম্বই ফিরছেন জানিয়ে কঙ্গনা টুইটে মন্তব্য করেছিলেন— মুম্বই এখন আদতে ‘পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর’। ক্ষিপ্ত শিবসেনা জানিয়ে দেয়, কঙ্গনা যেন মুম্বইয়ে না-ফেরেন। বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ তুলে ওই দিনেই বৃহন্মুম্বই পুরসভা কঙ্গনার দফতর ভাঙা শুরু করে, পরে যা বম্বে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশে বন্ধ হয়।

চণ্ডীগড় থেকে মুম্বই আসার বিমানে সাংবাদিকেরা যে ভাবে উড়ান-নিরাপত্তা ও দূরত্ব বিধির তোয়াক্কা না করে ভিড় করে কঙ্গনার সঙ্গে কথা বলেছেন, তা নিয়ে ইন্ডিগোর কাছে রিপোর্ট চেয়েছে ডিজিসিএ (ডাইরেক্টর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন)। ইন্ডিগো জানিয়েছে, তারা জবাব দেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement