Kangana Ranaut

তাঁর থাপ্পড় খাওয়ার ঘটনায় কেন নীরব বলিউড? ক্ষুব্ধ কঙ্গনা, কুলবিন্দরের পক্ষে ‘ইনসাফ যাত্রা’য় কৃষকেরা

চড়-কাণ্ডের পরে গত ২৪ ঘণ্টায় তেমন ভাবে কঙ্গনার পাশে দাঁড়ায়নি বলিউড। বরং, অভিযুক্ত সিআইএসএফ জওয়ান কুলবিন্দর কউরকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন সুরকার বিশাল দাদলানি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৪ ০৮:৫৯
Share:

কঙ্গনা রানাউত। —ফাইল ছবি।

চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে তাঁর ‘আক্রান্ত’ হওয়ার ঘটনায় বলিউড কেন চুপ তা নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী তথা হিমাচল প্রদেশের মণ্ডী থেকে বিজেপির টিকিটে জেতা কঙ্গনা রানাউত। সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করে ক্ষোভ জানিয়েছেন বলিউডের এই অভিনেত্রী। রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে লিখেছেন, ‘আপনি যখন কারও উপর সন্ত্রাসবাদী হামলা উদ্‌যাপন করেন, তা হলে নিজেও সেই দিনের জন্য প্রস্তুত থাকুন, এটা আপনার কাছেও ফিরে আসবে’। যদিও পরে ইনস্টাগ্রামের পোস্টগুলি মুছে দেন অভিনেত্রী।

Advertisement

চড়-কাণ্ডের পরে গত ২৪ ঘণ্টায় তেমন ভাবে কঙ্গনার পাশে দাঁড়ায়নি বলিউড। বরং, অভিযুক্ত সিআইএসএফ জওয়ান কুলবিন্দর কউরকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন সুরকার বিশাল দাদলানি। প্রয়োজনে ওই জওয়ানকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। ওই ঘটনার জেরে গ্রেফতার করা হয়েছে কুলবিন্দরকে। তাঁর সমর্থনে সুর চড়িয়েছে পঞ্জাবের কৃষক সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, ঘটনার নিরপেক্ষ এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। আগামী পরশু, রবিবার মোহালিতে ‘ইনসাফ যাত্রা’র ডাক দিয়েছেন কৃষক নেতারা।

চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরে বলিউডের নীরবতা নিয়ে আজ নিজের ক্ষোভ সমাজমাধ্যমের দেওয়ালে পোস্ট করেছেন কঙ্গনা। লিখেছেন, ‘‘সকলের নজর রাফা গ্যাংয়ের দিকে, এটা আপনার বা আপনার সন্তানদের সঙ্গেও ঘটতে পারে। আপনি যখন কারও উপর সন্ত্রাসবাদী হামলা উদ্‌যাপন করেন, তা হলে নিজেও সেই দিনের জন্য প্রস্তুত থাকুন, এটা আপনার কাছেও ফিরে আসবে’। প্রসঙ্গত, রাফায় ইজ়রায়েলি হামলার প্রতিবাদে সম্প্রতি আলিয়া ভট্ট, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, করিনা কপূর-সহ বলিউডের বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী সরব হয়েছিলেন। রাফার বাসিন্দাদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে সমাজমাধ্যমে ‘অল আইস অন রাফা’ শব্দবন্ধে তাঁরাও শামিল হয়েছিলেন। ওই প্রসঙ্গ তুলে আজ খোঁচা দিয়েছেন ক্ষুব্ধ কঙ্গনা। একই সঙ্গে আর একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, আপনারা সকলে হয় উদ্‌যাপন করছেন বা আমার উপর বিমানবন্দরে হামলার ঘটনায় সম্পূর্ণ নীরব। মনে রাখবেন যদি আগামিকাল আপনি আপনার দেশের বা বিশ্বের অন্য কোথাও নিরস্ত্র ভাবে হাঁটছেন এবং কিছু ইজ়রায়েলি/প্যালেস্টাইনি আপনার বা আপনার সন্তানদের উপরে চড়াও হল।... তারপরও দেখবেন আমি আপনাদের বাকস্বাধীনতার জন্য লড়ছি’। পরে অবশ্য ওই পোস্টগুলি সমাজমাধ্যমের দেওয়াল থেকে মুছে দিয়েছেন মণ্ডী থেকে জেতা ওই বিজেপি প্রার্থী।

Advertisement

বলিডউড যে চড়-কাণ্ডে একেবার নীরব তা নয়, অভিনেত্রী রবিনা টন্ডন, বলিউডের চলচ্চিত্র পরিচালক বিবেক রঞ্জন অগ্নিহোত্রী ঘটনার নিন্দা করেছেন। এক্স-হ্যান্ডলে বিবেক লিখেছেন, ‘প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তির কঙ্গনা রানাউতের সঙ্গে ঘটা এই ঘটনার নিন্দা করা উচিত। কারণ শুধু বিবেকবানরাই বোঝেন এটা গণতন্ত্রের জন্য কতটা বিপজ্জনক’। তাঁর সংযোজন, ‘যাঁরা কঙ্গনাকে নিয়ে হাসাহাসি করছেন, তাঁরা অবশ্যই জানেন যে আপনার টুইটও অনেকে পছন্দ করছেন না’। বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন সুরকার বিশাল দাদলানি। নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ঘটনার একটা ভিডিও শেয়ার করেছেন এবং ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমি কখনওই হিংসা সমর্থন করি না। তবে আমি ওই সিআইএসএফ কর্মীর রাগের কারণ বুঝি। সিআইএসএফ যদি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়, তবে আমি ওঁর চাকরি নিশ্চিত করব, যদি তিনি সেই চাকরি গ্রহণ করতে চান। জয় হিন্দ। জয় জওয়ান। জয় কিষাণ’। আরও একটা ইনস্টা-স্টোরিতে তিনি লেখেন, ‘যদি মিস কউরকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তবে কেউ ওঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ করিয়ে দেবেন, প্লিজ। আমি নিশ্চিত করব যে তিনি ভাল জায়গাতেই কাজ পাবেন।’

কিসান মজদুর সংঘর্ষ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শের সিংহের বোন কুলবিন্দর। দুই সন্তানের মা ওই সিআইএসএফ জওয়ানের পরিবার রবারবই কৃষক-রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর সমর্থনে পথে নেমেছে কৃষক সংগঠনগুলিও। সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা, কিষাণ মজদুর মোর্চার তরফে আজ জানানো হয়, তারা কুলবিন্দরের পাশে দাঁড়িয়েছে। সম্মিলিত কিষাণ মোর্চার এক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল বলেন, ‘‘আমরা সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। মহিলা কনস্টেবলের সঙ্গে কোনও অবিচার করা উচিৎ নয়।’’ মোহালির এসপি অফিসের সামনে রবিবার ‘ইনসাফ’ যাত্রা বার করবেন কৃষকেরা।

ওই ঘটনায় মুখ খুলতে শুরু করেছ্ন রাজনৈতিক নেতারা। শিবসেনা (ইউবিটি)-র নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘‘কেউ ভোট দেয়, কেউ থাপ্পড় দেয়। আসলে কী হয়েছে, আমি জানি না। কনস্টেবল যদি বলে থাকেন যে, ওঁর মা আন্দোলনে বসেছিলেন, তা হলে তা সত্যি। যদি ওঁর মা কৃষকের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকেন এবং কেউ এর বিরুদ্ধে কিছু বলেন, তা হলে ক্ষোভ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁরা ভারতেরই ছেলে-মেয়ে। কেউ যদি ভারত মাকে অপমান করে এবং তাতে কেউ ক্ষুব্ধ হয়, তা হলে তা ভাবার বিষয়।’’ ঘটনার নিন্দা করেছেন মণ্ডীতে কঙ্গনা যাঁকে পরাজিত করেছেন সেই কংগ্রেস প্রার্থী বিক্রমাদিত্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement