কমল নাথ।
সঙ্কটের ছায়া মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ সরকারের উপর। কিন্তু নেপথ্যে কে?
গত কাল মাঝরাতে হঠাৎ দিগ্বিজয় সিংহ, তাঁর ছেলে জয়বর্ধন, কংগ্রেস নেতা জীতু পটওয়ারিরা পৌঁছে যান গুরুগ্রামের এক পাঁচতারা হোটেলে। অভিযোগ, বিজেপি সেখানে কংগ্রেস, সামাজবাদী পার্টি, বিএসপি এবং নির্দল মিলিয়ে মধ্যপ্রদেশের আট বিধায়ককে আটকে রেখেছে। কাউকে বলা হচ্ছে ৩৫ কোটি টাকা দেওয়া হবে, কাউকে ৫০, কাউকে ১০০ কোটি টাকা। প্রথম কিস্তির ৫ কোটি এখন। সামনে রাজ্যসভার ভোটে বিজেপির পক্ষে মত দিলে দ্বিতীয় কিস্তি। আর সরকার ওল্টালে বাকিটা। কংগ্রেসের ওই নেতাদের অভিযোগ, শিবরাজ সিংহ চৌহান আসল ‘মাস্টারমাইন্ড’। অমিত শাহের ইশারাতেই সব হচ্ছে। আবারও ‘অপারেশন পদ্ম’, কর্নাটকের মতো!
কমল নাথে সরকারের গরিষ্ঠতা নামমাত্র। রাজ্যসভায় এ রাজ্যের তিন আসনে ভোট। বিজেপির দু’টি। কংগ্রেসের একটি, দিগ্বিজয় সিংহের আসন। বাড়তি দশ জন বিধায়কের সমর্থন পেলে বিজেপি ২টি আসন পেতে পারে। ফলে বিজেপির একটি আশু লক্ষ্য আছেই। নেতারাও প্রকাশ্যে
বলছেন, ১৫-২০ বিধায়ক বিজেপির যোগাযোগে আছেন। অভিযোগের আঙুল যার দিকে, সেই শিবরাজ বলছেন, ‘‘কংগ্রেসের ঘরের ঝামেলা! আমাদের কেন দোষ দেওয়া হচ্ছে?’’
কাল রাতে গুরুগ্রামের ওই হোটেল থেকে বিএসপির এক বিধায়ককে নিয়ে এসেছেন কংগ্রেস নেতারা। বাকিদের নাকি কর্নাটকে পাঠিয়ে দেয় বিজেপি। আজ রাতে কংগ্রেস দাবি করেছে, সকলেই ফিরে আসছেন। পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এনে কমল নাথও বলেছেন, ‘‘বিধানসভায় সংখ্যা আছে। প্রমাণ করেছি।’’ পরে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও বলেন, ‘‘আমরা একজোট। সরকারের বিপদ নেই। এ সব বিজেপির পুরনো চাল।’’
কিন্তু দিল্লিতে কংগ্রেসের কোনও শীর্ষ নেতা সারা দিনে কেন বিজেপির বিরুদ্ধে আগের মতো সরব হলেন না?
কংগ্রেসের অন্দরের খবর, গোটা চিত্রনাট্য রচনা করেছেন দিগ্বিজয়ই। তিনি ফের রাজ্যসভা যেতে চান। এবং জ্যোতিরাদিত্য রাজ্যসভায় যান, সেটা একেবারেই চান না। কেউ কেউ প্রিয়ঙ্কা
গাঁধী বঢরাকেও রাজ্যসভায় পাঠাতে চান এই রাজ্য থেকে। সেটিও তাঁর নাপসন্দ। তাই সঙ্কট তৈরি করে নিজেই এখন ‘সঙ্কটমোচক’ হতে চাইছেন।
রাজ্যের এক মন্ত্রী, উমঙ্গ সিংঘার প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘‘সরকার নিরাপদ। এ শুধু রাজ্যসভায় যাওয়ার দৌড়। বাকিটা বুঝে নিন।’’ কংগ্রেসের নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, দলের বিদ্রোহীদের সিংহভাগই দিগ্বিজয়ের সমর্থক। এক জন সিন্ধিয়ার। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে দিগ্বিজয়ের এই চাপের রাজনীতি একেবারেই ভাল চোখে নেননি রাহুল গাঁধী। তাই গোটা দিন চুপ ছিলেন। অস্বস্তি ঢাকতে রাতে অবশ্য রাহুল বিজেপিকে তোপ দেগে দলের নেতা কে সি বেণুগোপালকে বিবৃতি জারি করতে বলেন। আগামিকাল সংসদেও এ নিয়ে সরব হতে বলেছেন রাহুল।