— ফাইল চিত্র।
তামিলনাড়ুতে বিষমদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। রাতারাতি পাল্টে যাচ্ছে গ্রামের ছবি। চারপাশে শুধু স্বজনহারা কান্না, আর্তনাদ। তামিলনাড়ুর কল্লাকুরিচি জেলায় মৃতের সংখ্যা ৫৩ ছুঁয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। রাজ্যের আবগারি মন্ত্রী এস মুথুসামির পদত্যাগের দাবিতে সরব বিজেপি। একই সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল ডিএমকে-র বিরুদ্ধেও সুর চড়াচ্ছে তারা। অভিযোগ, ‘এই জঘন্য অপরাধে’র জন্য দায়ীদের রক্ষা করছে সরকার।
কল্লাকুরিচি জেলার কালেক্টর এমএস প্রশান্ত অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘বিষমদ খেয়ে অসুস্থদের মধ্যে ১৯৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের মধ্যে ১৪০ জন বিপন্মুক্ত। তবে কয়েক জনকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।’’ এই বিষমদকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে এখনও পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রশান্ত আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সকলের চোখের আড়ালে কী ভাবে বিষমদ তৈরি হল, এই চক্রের নেপথ্যে কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা করছে তামিলনাড়ু পুলিশ। এ ছাড়াও আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ থেকে ৫৬ জন চিকিৎসককে আনা হয়েছে চিকিৎসার জন্য।
একই সঙ্গে চলছে রাজ্যের বিভিন্ন অবৈধ মদের ঘাঁটিতে হানা। লিটার লিটার বেআইনি মদ বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই ঘটনার জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, যে সব প্রশাসনিক আধিকারিক এই ধরনের ঘটনা রুখতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই প্রথম নয়, গত বছরেও বিষমদ খেয়ে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছিল তামিলনাড়ুতে। কল্লাকুরিচির এই কাণ্ড প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, আগের বারের ঘটনা থেকে কেন শিক্ষা নেয়নি রাজ্য সরকার? কেন তার পরেও রাজ্যে রমরমিয়ে বেআইনি মদের ব্যবসা চলেছে? কেন প্রশাসন নজরদারি চালায়নি? এই সব প্রশ্ন তুলে শাসকদলের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠছে।
বিজেপি নেতা শেহজ়াদ পুনাওয়ালার কথায়, ‘‘এটি একটি রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট হত্যাকাণ্ড, যার জন্য দায়ী একমাত্র ডিএমকে সরকার। স্ট্যালিন সরকার এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে অপরাধীদের আড়াল করছে।’’