নিট কেলেঙ্কারির চক্রী রবি অত্রি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নিটে প্রশ্নপত্র ফাঁসে শনিবার গ্রেফতার হলেন আরও এক জন। উত্তরপ্রদেশের পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) গ্রেটার নয়ডা থেকে গ্রেফতার করেছে রবি অত্রি নামে এক ব্যক্তিকে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই রবিই নিট কেলেঙ্কারির অন্যতম মূল চক্রী। শুধু তা-ই নয়, এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নেপথ্যে রয়েছে ‘সলভার গ্যাং’। ঘটনাচক্রে, সেই গ্যাংয়ের অন্যতম মাথা আবার রবিই।
শুক্রবারই এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত সন্দেহে ঝাড়খণ্ডের দেওঘর থেকে সিকন্দর যাদবেন্দ্র নামে এক সন্দেহভাজন-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পটনা পুলিশ। তার আগে এই ঘটনায় আরও ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই কেলেঙ্কারিতে এখনও পর্যন্ত ধৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯। পুলিশ সূত্রে খবর, নিট কেলেঙ্কারিতে অতুল বৎস, সিকন্দর যাদবেন্দ্র, সঞ্জীব মুখিয়ার পাশাপাশি রবি অত্রিরও নাম উঠে এসেছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, প্রশ্নপত্র ফাঁসে নিজের গ্যাংকে কাজে লাগিয়েছিলেন রবি।
অতুল বৎস এবং সঞ্জীব মুখিয়া বিহারের পটনা এবং নালন্দায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছিলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। সঞ্জীবকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু অতুলের কোনও হদিস পায়নি। রবিরও খোঁজ চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে শনিবার গ্রেটার নয়ডার নিমকা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবি যে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, তার নাম দিয়েছিলেন ‘সলভার গ্যাং’। সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগ রয়েছে রবির বিরুদ্ধে। এই প্রথম নয়, রবির প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাম্রাজ্য শুরু হয়েছিল বছর বারো আগে। ২০১২ সালে মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ।
কে এই রবি? পুলিশ সূত্রে খবর, রবি নিজেও নিট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ২০০৭ সালে রাজস্থানের কোটায় পড়তে পাঠিয়েছিল তাঁর পরিবার। সেই সময়েই তিনি ‘সলভার গ্যাং’-এর সংস্পর্শে আসেন। ২০১২ সালে নিট পাশ করেছিলেন। তার পর হরিয়ানার রোহতক পিজিআইতে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু মাঝপথেই পড়া ছেড়ে দেন। আর সেই সময়েই তাঁর বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সময় ‘পরীক্ষা মাফিয়া’দের সংস্পর্শে আসেন রবি। অন্যের হয়ে পরীক্ষায় বসতেন। তার পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের চক্রে জড়িয়ে পড়েন। সেই থেকে তাঁর সাম্রাজ্যের জাল আরও বিস্তার করেছেন রবি। আবার তিনি পুলিশের জালে।