কাফিল খান। —ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে ফের যোগী সরকারের নজরে চিকিৎসক কাফিল খান। রাজ্যে নতুন করে ৮১ জনকে নিয়ে অপরাধী তালিকা তৈরি হয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ওই ৮১ জনের মধ্যে প্রথম ১০ জনের মধ্যেই কাফিল খানের নাম রয়েছে। অর্থাৎ আজীবন তাঁর গতিবিধির উপর নজরদারি চালাবে রাজ্যের পুলিশ।
২০১৭ সালে গোরক্ষপুর বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে অক্সিজেনের অভাবে কমপক্ষে ৬০ শিশুর মৃত্যু হয়। তাতে দেশ জুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে যোগী সরকার। সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজের ক্লিনিক থেকে কাফিল হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করেছিলেন বলে জানা যায়।
কিন্তু পরবর্তী কালে গোটা ঘটনার জন্য তাঁকেই দায়ী করে রাজ্য সরকার। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। তবে দু’বছর ধরে তদন্তের পর সমস্ত অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়া হয় কাফিলকে। সেই থেকেই যোগী সরকারের সঙ্গে তাঁর টানাপড়েনের সূত্রপাত।
এর পর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি (এএমইউ)-তে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে বক্তৃতায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জন নিরাপত্তা আইনে (এনএসএ) মামলা দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। তবে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর ইলাহাবাদ হাইকোর্টে তাঁকে মুক্তি দেয়।
কিন্তু তার পরেও যোগী সরকারের সঙ্গে তাঁর সঙ্ঘাত মেটেনি। গোরক্ষপুর হাসপাতালে তাঁকে পুনরায় নিযুক্ত করতে বার বার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও সাড়া দেয়নি যোগী সরকার। এমনকি ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হলেও, তা কানে তোলেনি রাজ্য সরকার।
তার মধ্যেই রাজ্যের ১ হাজার ৫৪৩ জন অপরাধীর তালিকায় পাকাপাকি ভাবে তাঁর নাম তোলা হল। তবে কাফিল খানের বক্তব্য, ‘‘আজীবন আমার উপর নজরদারি চালানো হবে। এক দিকে ভালই হল। আমি তো চাই ২৪ ঘণ্টা দু’জন নিরাপত্তা রক্ষী থাকুক আমার সঙ্গে। তাতে অন্তত ভুয়ো মামলা থেকে রক্ষা পাব। সমস্যা হল, উত্তরপ্রদেশে কুখ্যাত অপরাধীরা অবাধে ঘুরে বেড়ায়। অপরাধের খাতা খোলা হয় শুধুমাত্র নিরীহদের।’’