বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রথমে স্কুটি। তারপর বাহন জমা রেখে নদীতে একা একা নৌকো বেয়ে যাওয়া। এরপর বিপদসঙ্কুল পাহাড়ি জঙ্গলপথে দু’ ঘণ্টা ট্রেকিং। অবশেষে দেখা পান চোদ্দ জন পড়ুয়ার। যাদের পড়াতে রোজ এই যাত্রাপথ পাড়ি দেন কেরলের শিক্ষিকা কে আর ঊষাকুমারী। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
গত কুড়ি বছরেরও বেশি সময় ধরে এটাই প্রাত্যহিক কাজ এই শিক্ষিকার। একদিনের জন্যেও কর্মক্ষেত্রে পৌঁছতে দেরি হয় না তাঁর। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে বাড়ি না ফিরে থেকে যান কোনও পড়ুয়ার বাড়িতে। যাতে পরের দিন অনুপস্থিত না হতে হয়। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
তিরুঅনন্তপুরম জেলার অমবুরি গ্রামের বাসিন্দা এই শিক্ষিকা প্রতি সকালে সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ি থেকে বার হন। স্কুটিতে পৌঁছন কুম্বিক্কল কাদাভু অবধি। এরপর নদীতে নৌকো বেয়ে তিনি পৌঁছন ‘অগস্ত্যবনম’ বনাঞ্চলের কাছে। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
এ বার শুরু হয় ঊষাকুমারীর জঙ্গল-পাড়ি। একটি মাত্র লাঠি সম্বল করে তিনি দু’ঘণ্টা ধরে ঘন অরণ্যের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যান পাহাড়ি পথে। বন্যপ্রাণীদের আক্রমণের আশঙ্কায় বিপদসঙ্কুল এই পথের পরে ঊষাকুমারী পৌঁছন নিজের কর্মক্ষেত্র, ‘অগস্ত্য একা আদ্যপক স্কুল’-এ। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
কুন্নাথুমালার ওই স্কুলে কান্নি উপজাতির পড়ুয়াদের জন্য ঊষাকুমারীই একমাত্র শিক্ষিকা। তিনিই তাঁদের যত্ন করে পড়ান গণিত, বিজ্ঞান ও ভাষা। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
শুধু পড়ানোই নয়। নিজের হাতে পরিবেশন করেন মিড ডে মিল। বেতনের টাকা থেকে ব্যবস্থা করেন দুধ ও ডিমের। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
নিজের বেতন কোনও কারণে অনিয়মিত হলেও ছাত্র ছাত্রীদের মিড ডে মিল-এ দুধ ও ডিমের যোগান বন্ধ হতে দেননি তিনি। একান্তই তিনি না আসতে পারলে ব্যবস্থা করেছেন একজন কেয়ারটেকারের। ক্লাস না হলেও যাতে বন্ধ না হয় পড়ুয়াদের মিড ডে মিল। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
ঊষাকুমারীর শুরুর যাত্রাপথ ছিল আরও বন্ধুর। তিনি যখন প্রথম চাকরি শুরু করেছিলেন, ছিল না কোনও স্কুলের বিল্ডিং-ই। গাছতলায় বড় পাথরখণ্ডে বসে পড়াতেন তিনি। পরে তৈরি হয় স্কুলের বাড়ি। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
এই কুর্নিশযোগ্য কাজের জন্য ঊষাকুমারী বহু স্বীকৃতি পেয়েছেন। তার মধ্যে আছে কেরল অ্যাসোসিয়েশন ফর ননফরমাল এডুকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর ‘সাক্ষরতা পুরস্কারম’-ও। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
কিন্তু এই শিক্ষাব্রতী জানিয়েছেন, তাঁর কাছে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হবে, যখন পরবর্তী সময়ে তাঁর স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আরও বেশি হারে নিজেদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। সেখানেই তাঁর কৃচ্ছ্রসাধনের সার্থকতা। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)