JNU Attack. ABVP

জেএনইউ: পড়ুয়াদের উপরই হামলার দায় চাপালেন উপাচার্য, তাঁর অপসারণের দাবি অধ্যাপকদের একাংশের

সোমবার সকালে টুইটারেই প্রথম মুখ খোলেন উপাচার্য এম জগদেশ কুমার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:৫০
Share:

উপাচার্যকে সরানোর দাবি তুললেন অধ্যাপকরা।

ক্যাম্পাসে মুখোশধারীদের তাণ্ডবের ঘটনায় ফের পড়ুয়াদের সঙ্গে সরাসরি সঙ্ঘাতের রাস্তা ধরলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) উপাচার্য এম জগদেশ কুমার। বর্ধিত হস্টেল ফির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ চালিয়ে আসছেন যে পড়ুয়ারা, রবিবারের ঘটনার জন্য ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জন্য তাঁদেরই দায়ী করলেন তিনি। তাঁর দাবি, আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মধ্যে কয়েক জন হিংসার রাস্তা ধরাতেই জেএনইউয়ে এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

Advertisement

বর্ধিত হস্টেল ফি-র বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ চালিয়ে আসছেন জেএনইউয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। পরীক্ষায় জন্য নাম নথিভুক্তিকরণও বয়কট করেছেন তাঁরা। সেই নিয়ে আন্দোলন চলাকালীনই গতকাল সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের চড়াও হয় একদল মুখোশধারী। পাথর, লোহার রোড, লাঠি নিয়ে হস্টেলে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তারা। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের বেধড়ক মারধর করে। এমনকি তাদের হাত থেকে নিস্তার পাননি অধ্যাপকরাও।

অথচ তার পর রাত পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। কোনও মন্তব্য করা হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফেও। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার সকালে টুইটারেই প্রথম মুখ খোলেন উপাচার্য এম জগদেশ কুমার। আর সেখানেই আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। জগদেশ কুমার লেখেন, ‘‘আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মধ্যে কয়েক জন হিংসার রাস্তা বেছে নেওয়াতেই আজ এমন পরিস্থিতি জেএনইউ-তে। যাঁরা আন্দোলনে অংশ নেননি, তাঁদেরও পড়াশোনাতেও ব্যাঘাত ঘটানো হয়েছে। পরীক্ষায় নাম নথিভুক্তিকরণ প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে সার্ভারেরও ক্ষতি করেছে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। হাজার হাজার পড়ুয়াকে নাম নথিভুক্তিকরণে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম অচল করে দেওয়াই ওদের উদ্দেশ্য। এটা একধরনের গুন্ডামি, যা জেএনইউয়ের নীতির পরিপন্থী। কাউকে রেয়াত করা হবে না। কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

উপাচার্যের টুইট।

তবে তাঁর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদ। বিজেপি আইটি সেলের সঙ্গে পরামর্শ করে গতকালের ঘটনার অভিমুখ ঘুরিয়ে দিতেই তিনি এমন মন্তব্য করছেন বলে দাবি তাদের। এ দিন তাদের টুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘‘রাতে দীর্ঘ ক্ষণ বিজেপির আইটি সেলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই গতকালের হামলার ঘটনার অভিমুখ ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন উপাচার্য। কিন্তু আদতে কী ঘটেছিল, তা উনি ছাড়া সকলেই জানেন। এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা পাচ্ছে পড়ুয়ারা। প্রত্যেকেই তাণ্ডবের সাক্ষী থেকেছে।’’

ছাত্র সংসদের টুইট।

উপাচার্যের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মুখ খুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সংগঠনও। তাঁকে সরানোর দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে খোলা চিঠি দিয়েছেন অধ্যাপকরা। তাতে বলা হয়, ‘‘ইট-পাথর, লোহার রড এবং লাঠি হাতে একটা দলকে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। হস্টেলে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালায় তারা। তাতে ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ অনেকেই আহত হয়েছেন। অধ্যাপকদের ডাকা বৈঠকেও হামলা চালানো হয়। এর জন্য সরাসরি জেএনইউ কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছি আমরা। গোটা ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি জানাচ্ছি আমরা। কিন্তু এম জগদেশ কুমার দায়িত্বে থাকাকালীন তা সম্ভব নয়। অবিলম্বে ওঁকে সরানো হোক।’’

অন্য দিকে, গতকালের ঘটনার পর এ দিন সকালে ইস্তফা দেন সাবরমতী হস্টেলের সিনিয়র ওয়ার্ডেন রামাবতার মীনা। সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব স্টুডেন্টসকে চিঠি লিখে ইস্তফা দেন তিনি। তাতে তিনি লেখেন, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে সাবরমতী হল্টেলে হামলার খবর জানতে পারি। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ফের হামলা হয় সেখানে। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। এর নৈতিক দায় স্বীকার করে ইস্তফা দিচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement