দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে কাপড়ে মুখ ঢাকা দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের ৭২ ঘণ্টা পরেও গ্রেফতার হননি এক জনও। তবে বুধবার পুলিশের কাছে খুনের চেষ্টা এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করলেন জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ। দুষ্কৃতীদের রডের আঘাতে মাথা ফেটে যাওয়ার পরে ঐশী-সহ ২০ জনের নামেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার জেএনইউয়ের ক্যাম্পাস নিস্তরঙ্গ থাকলেও, জেএনইউয়ে হামলা, নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র প্রতিবাদে এ দিন মুখর হলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালেয়র পড়ুয়াদের বড় অংশ। রাস্তায় নেমে আন্দোলনে শামিল হলেন দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্স, সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ, মিরান্ডা হাউস, লেডি শ্রীরাম কলেজের পড়ুয়ারা। এমস, আইআইটি, আইআইএম-এর মতো সচরাচর আন্দোলনে সরব হতে দেখা যায় না যাঁদের। কোথাও ‘আজাদির স্লোগান’ উঠেছে, কোথাও ব্যানারে দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেওয়ার ছবি। সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে ক্লাস বাদ দিয়ে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করেছেন পড়ুয়ারা। গেয়েছেন ‘হম দেখেঙ্গে’। যাকে বেশ ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবেই দেখছেন অনেকে।
তবে তারই মধ্যে মাথা চাড়া দিয়েছে বিতর্কও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কাশ্মীর আজাদ’ লেখা একটি পোস্টারের ছবি দিয়ে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। কারা এর পিছনে রয়েছেন, তা খতিয়ে দেখার কথা বলেছে দিল্লি পুলিশও।
এ দিন কিছুটা শান্ত ছিল জেএনইউ ক্যাম্পাস। তবে তারই মধ্যে এ দিন সেখানে এসেছিলেন কংগ্রেসের তরফে একটি তথ্যানুসন্ধানী দলের সদস্যরা। আক্রান্ত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। এসেছিলেন ডিএমকে নেত্রী এম কে কানিমোঝিও। পরে জামিয়ার প্রতিবাদ সভাতেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।
বিকেলে ফের সাংবাদিক সম্মেলন করেন জেএনইউয়ের সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ শিক্ষক সংগঠন জেএনইউটিএফের সদস্যরা। সেখানে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের তরফ থেকে তোলা হিংসায় ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ খারিজ করে অশ্বিনী মহাপাত্রের পাল্টা দাবি, ‘‘ঘটনাস্থলে ছিলাম মানেই মারতে ইন্ধন জুগিয়েছি? গিয়েছিলাম পরীক্ষায় নাম নথিভুক্তিতে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের সাহায্য করার জন্যই।’’ সার্ভার রুম বা পেরিয়ার হস্টেলে মুখ বেঁধে ঐশী ঘোষদের ‘চড়াও হওয়ার ভিডিয়ো’ সামনে আসা সত্ত্বেও তা নিয়ে কেন অভিযোগ তোলা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। সংস্কৃতের অধ্যাপক রবি রাম মিশ্রের হুঁশিয়ারি, যোগেন্দ্র যাদবকে নিগ্রহে তাঁর ইন্ধন দেওয়ার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাতে ক্ষমা না-চাইলে মানহানির মামলা করবেন।