প্রাক্তনীদের আটকাল পুলিশ, উড়ল ড্রোন

ক্যাম্পাসের মূল গেট দিয়ে ঢোকার জন্য মিছিল করে আসছিলেন প্রাক্তনীরা। যাঁদের বড় অংশের চুল সাদা। সামনে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও প্রকাশ কারাট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২০
Share:

সীতারাম ইয়েচুরিদের মিছিল আটকাল পুলিশ। ছবি: টুইটার।

সন্ধ্যা নেমেছে সবে। জেএনইউ ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের সামনে বক্তব্য রাখছেন সীতারাম ইয়েচুরি, যোগেন্দ্র যাদব, কানহাইয়া কুমারের মতো প্রাক্তনীরা। তার মধ্যেই আকাশে চক্কর কাটতে দেখা গেল একাধিক ড্রোনকে। মুহূর্তে সরগরম জেএনইউ চত্বর। কেউ হাতে ধরা তেরঙা পতাকা নাড়াতে লাগলেন তাকে তাক করে। অনেকে মোবাইলে আলো জ্বালিয়ে ডাক দিলেন, ‘নেমে আয়। হামলার সময়ে ছিলি কোথায়?’ অনেকের প্রশ্ন, বিমানবন্দরের এত কাছে ড্রোন উড়ছে কী ভাবে?

Advertisement

এর কিছু আগেই তৈরি হয়েছিল উল্টো ছবি। ক্যাম্পাসের মূল গেট দিয়ে ঢোকার জন্য মিছিল করে আসছিলেন প্রাক্তনীরা। যাঁদের বড় অংশের চুল সাদা। সামনে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও প্রকাশ কারাট। কিন্তু ২০০-২৫০ মিটার দূরে ব্যারিকেড করে তাঁদের আটকে দিল পুলিশ। মুহূর্তে শুরু হল প্রতিবাদী গান। প্রাক্তনীদের অনেকে রেগে অগ্নিশর্মা। কেউ আবার বিদ্রুপ মেশানো ঠান্ডা গলায় পুলিশের দিকে প্রশ্ন ছুড়লেন, ‘‘আমাদের মুখ কাপড়ে ঢাকা নয় আর হাতে অস্ত্র নেই বলে যেতে দেবেন না বুঝি?’’ ব্যারিকেড অবশ্য ওঠেনি। ঘুরপথে আসার পরে অনেককে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দেয় দিল্লি পুলিশ।

জেএনইউ চত্বরে শিক্ষক সংগঠন জেএনইউটিএ আয়োজিত আলোচনায় অবশ্য উদ্বেগ আর লড়াই জারি রাখার সুরই ভেসে বেড়াল সারাক্ষণ। সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদবের দাবি, স্বৈরতন্ত্র কায়েমের প্রথম শর্তই হচ্ছে, প্রশ্ন করার সাহসকে শেষ করা। তাই বার বার নিশানা করা হচ্ছে জেএনইউ-কে। ইঙ্গিত দিলেন, তার নির্দেশ আসছে কেন্দ্রীয় সরকারের একেবারে উপরের মহল থেকে। একই কথা বললেন সিপিআই নেতা ডি রাজা। ব্যান্ডেজে ঢাকা মাথা নিয়ে জেএনইউএসইউয়ের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ আসতেই সমর্থনের তুমুল চিৎকার বরাদ্দ থাকল তাঁর জন্য। হাততালি তোলা থাকল কানহাইয়া কুমারের জন্যও। এমসের ডাক্তার শাহ আলম খানের দাবি, ‘‘বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিন্স বলতেন মানবজাতিকে ধ্বংস করতে পারে দু’টি জিনিস। লোভ এবং বোকামি। দেশে সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমে দুই লক্ষণই স্পষ্ট।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় জানালেন, প্রাক্তনী হলেও আজ কংগ্রেস প্রতিনিধি হিসেবেই এসেছেন তিনি।

Advertisement

আর জেএনইউএসইউ-এর তিন বারের প্রেসিডেন্ট সীতারাম ইয়েচুরি মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘জরুরি অবস্থার সময়েও ইন্দিরা গাঁধীর ক্যাম্পাসে ঢোকা রুখে দিয়েছিল জেএনইউ। তার পরে ভোটেও হেরে গিয়েছিলেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি যেন সেই ইতিহাস না-ভোলেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement