পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে অনুরোধ জানালেন জগদীশ কুমার। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
ক্যাম্পাসে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে মুখওশধারী দুষ্কৃতীরা। তার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) উপাচার্য এম জগদীশ কুমার। তাঁর ইস্তফার দাবিতে পড়ুয়া এবং অধ্যাপকরা যখন জোরাল সওয়াল করছেন, ঠিক তখনই আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের নির্ভয়ে ক্যাম্পাসে ফেরার অনুরোধ জানালেন তিনি। অতীত ভুলে সব কিছু নতুন ভাবে শুরু করার আর্জি জানালেন।
রবিবার রাতে হামলার পর থেকেই সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছিলেন জগদীশ কুমার। বরং টুইটারে বার্তা দিয়েই কাজ সারছিলেন। শেষ মেশ মঙ্গলবার দুপুরে দিল্লিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘রবিবারের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং যন্ত্রণাদায়ক। আমাদের ক্যাম্পাস যুক্তি-তর্ক এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্যই পরিচিত। হিংসা কখনওই সমাধান হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সবরকম চেষ্টা করব আমরা।’’
রবিবারের ঘটনার পর আতঙ্কে হস্টেল ছাড়তে শুরু করেছিলেন পড়ুয়াদের একাংশ। এ দিন তাঁদের নির্ভয়ে ফিরে আসতে বলেন উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘জেএনইউ ক্যাম্পাস সম্পূর্ণ নিরাপদ। সমস্ত পড়ুয়াদের ফিরে আসতে অনুরোধ জানাচ্ছি। পরীক্ষার জন্য নাম নথিভুক্তিকরণ শুরু হয়েছে। এসো অতীত ভুলে সব কিছু নতুন ভাবে শুরু করি।’’
বর্ধিত হস্টেল ফি-র প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন জেএনইউয়ের পড়ুয়ারা। পরীক্ষার জন্য নাম নথিভুক্তিকরণও বয়কট করেছিলেন তাঁরা। সেই আন্দোলন চলাকালীনই লাঠিসোঁটা হাতে রবিবার তাঁদের উপর চড়াও হয় মুখোশধারীদের একটি দল। হস্টেলে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তারা। আন্দোলনকারী পড়ুয়া এবং অধ্যাপকদেরও মারধর করা হয়।
এই ঘটনায় শুরু থেকেই অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর সদস্যদের দিকে আঙুল তুলে আসছেন আন্দোলনকারী পড়ুয়া এবং নিগ্রহের শিকার অধ্যাপকরা। কিন্ত সেদিনের হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করে উঠতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে এ দিন সকালে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার একদল অফিসার এবং ফরেনসিক বিভাগের আধিকারিকরা ক্যাম্পাসে যান। তবে হামলাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি এখনও পর্যন্ত। হামলার দিন সার্ভার রুমে ভাঙচুর হওয়ায় সিসিটিভি ফুটেজও পেতেও সমস্যা হচ্ছে বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবে দেরিতে তদন্ত শুরু করার অভিযোগ এনেছেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। হামলার পরই জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের বিরুদ্ধে যে ভাবে এফআইআর দায়ের হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।