জেএমএম বিধায়ক লোবিন হেমব্রম (বাঁ দিকে) এবং হেমন্ত সোরেন। —ফাইল চিত্র।
ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় আস্থাভোটের আগে শাসকজোটের অস্বস্তি বাড়ল। এ বার ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র সমালোচনায় সরব হলেন সেই দলেরই বিধায়ক লোবিন হেমব্রম। দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করারর ইঙ্গিত দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের বোরিও কেন্দ্রের এই বিধায়ক। হেমন্ত সোরেনের দলের অবশ্য বক্তব্য, আস্থাভোটে অংশ নেবেন লোবিন। প্রসঙ্গত, হেমন্ত ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর গত শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের নয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন চম্পই সোরেন। আগামী সোমবার বিধানসভায় আস্থাভোটের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবে তাঁর নেতৃত্বাধীন জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডির সরকার।
লোবিনের দাবি, গ্রেফতারির আগে তিনি বার বার হেমন্তকে সাবধান করেছিলেন। কিন্তু শিবু সোরেনের পুত্র তাঁর কথা না কি ধর্তব্যের মধ্যে নেননি। তবে যে জমি দুর্নীতির অভিযোগে হেমন্ত গ্রেফতার হয়েছেন, সেই অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে বলে দাবি করেছেন জেএমএমের প্রবীণ এই বিধায়ক। তাঁর কথায়, “আমি তাঁকে (হেমন্ত) বহু বার সাবধান করে জানিয়েছি, তাঁর আশেপাশে যাঁরা ঘোরাফেরা করছে, তাঁদের থেকে সাবধান থাকতে। কিন্তু উনি আমাকে বললেন আমি না কি অবান্তর কথা বলছি এবং বিরোধীদের মুখ খোলার সুযোগ করে দিচ্ছি।” তার পরেই লোবিনের সংযোজন, “আমার কথা শুনলে হেমন্তকে এই দিন দেখতে হত না।”
লোবিনের অভিযোগ, নামে আদিবাসী নেতা রাজ্য চালালেও, আদতে ঝাড়খণ্ড চালাচ্ছেন আদিবাসী নন এমন মানুষেরা। হেমন্তের সরকার ২০১৯-এর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারার জন্যই আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যের নানা অঞ্চল থেকে দলিত, মূলনিবাসী মানুষদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর।
৮১ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় ‘জাদুসংখ্যা’ ৪১। শাসক জোটের হাতে রয়েছে ৪৮ জন বিধায়ক। জেএমএম ২৯, কংগ্রেস ১৬, আরজেডির ১ এবং সিপিআই (লিবারেশন) ১। এর মধ্যে হেমন্ত গ্রেফতার হওয়ায় তিনি বিধানসভায় ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন না। বর্তমানে চম্পইয়ের সঙ্গে রয়েছেন ৪৩ জন বিধায়ক। বাকি চার জনের দেখা পাওয়া যায়নি। এই চার জনের মধ্যে রয়েছে সে রাজ্যের বিষুণপুরের জেএমএম বিধায়ক চামরা লিন্ডা। হেমন্তের দাবি, তিনি অসুস্থ। যদিও দলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তার সঙ্গে যোগাযোগই করা যায়নি। সব মিলিয়ে আস্থাভোটের সময় দল এবং জোটের কত জন বিধায়ক বিধানসভায় থাকবেন, কত জন সরকার বাঁচাতে ভোট দেবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে জেএমএমের অন্দরেই।