ঝাড়খণ্ডের শিক্ষামন্ত্রী জগরনাথ মাহাতো। টুইটার থেকে নেওয়া ছবি
কোথায় নতুন স্কুল-কলেজ হবে, পঠনপাঠন কী ভাবে হবে, সে সবের বিষয়ে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ে তাঁর কলমে। অথচ তিনি নিজেইই কিনা দশম শ্রেণি পাশ? বিরোধীদের এমন কটাক্ষ-শ্লেষ শুনে ‘শিক্ষা’ নিয়ে শেষ পর্যন্ত ৫৩ বছর বয়সে নতুন করে পঠনপাঠন শুরু করলেন ঝাড়খণ্ডের শিক্ষামন্ত্রী জগরনাথ মাহাতো। সোমবারই একাদশ শ্রেণিতে তিনি নাম নথিভুক্ত করেছেন বোকারোর একটি সরকারি স্কুলে। শুধু নাম লেখানোই নয়, ক্লাসেও যাবেন বলে জানিয়ে মন্ত্রীর বার্তা, শেখার কোনও বয়স হয় না।
২০১৯-এর শেষের দিকে ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় ফেরে শিবু সরেনের দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। মুখ্যমন্ত্রী হন তাঁর ছেলে হেমন্ত সোরেন। ডুমরি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত কৄষক পরিবারের ছেলে জগরনাথ মাহাতোকে শিক্ষামন্ত্রী করেন হেমন্ত। কিন্তু জগরনাথ মাধ্যমিক পাশ। তাই নিয়ে বিরোধীরা লাগাতার আক্রমণ করতে থাকেন। এখনও শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে সুযোগ পেলেই জগরনাথের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়ে্ন না বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে বাজিমাত রাশিয়ার? বিশ্বে প্রথম টিকা তৈরির দাবি পুতিনের
বিষয়টিকে পাত্তা না দিলেও ঝাড়খণ্ডের শিক্ষামন্ত্রী যে ভিতরে ভিতরে ক্ষুব্ধ ছিলেন, তা বোঝা গিয়েছে সোমবার। ১৯৯৫ সালে মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন জগরনাথ। ২৫ বছর পরে ৫৩ বছর বয়সে ফের স্কুলের পাঠ নিতে ভর্তি হলেন বোকারোর নাবাডিতে দেবী মাহাতো স্মারক ইন্টার কলেজে। পড়বেন কলা বিভাগে। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, ‘‘পড়াশোনা আমি শেষ করবই। চাষবাসের কাজ আর জনসেবার ফাঁকে ক্লাসও করব। পড়াশোনা এবং শিক্ষার কোনও বয়স হয় না। এই ভাবেই সাধারণ মানুষকে আমি অনুপ্রেরণা দিতে চাই।’’
আরও পড়ুন: বাড়াতেই হবে টেস্ট, কনট্যাক্ট ট্রেসিং, মমতাদের বললেন মোদী
কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? মন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার দিন থেকেই অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। কারণ তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা। এই ক্রমাগত আক্রমণই তাঁকে নতুন করে স্কুলজীবন শুরু করার প্রেরণা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে বলেছেন, ‘‘এক জন দশম শ্রেণি পাশ মন্ত্রী রাজ্যের শিক্ষার জন্য কী করবে, এই ধরনের মন্তব্য যাঁরা করেছিলেন, এটা তাঁদের জন্য যোগ্য জবাব।’’