তিব্বতে ব্রহ্মপুত্রের উপর নদীবাঁধ তৈরি করতে চলেছে চিন! —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
তিব্বতে ব্রহ্মপুত্রের উপরে বাঁধ তৈরি করছে চিন। বেজিংয়ের তরফে জানানো হয়েছে, এটিই হতে চলেছে বিশ্বের বৃহত্তম নদীবাঁধ। বুধবার চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘জিনহুয়া’ জানিয়েছে, সম্প্রতি এই নদীবাঁধ প্রকল্পে ছাড়পত্র দিয়েছে সে দেশের সরকার। চিন নিয়ন্ত্রিত তিব্বতে ইয়াললুং জাংবো (তিব্বতি ভাষায় ব্রহ্মপুত্র যে নামে পরিচিত) নদের নিম্ন উপত্যকায় বাঁধটি তৈরি হতে চলেছে। ভারত সীমান্তের অনতিদূরে তৈরি করা হচ্ছে বাঁধটি।
চিনের এই প্রকল্প চিন্তায় রাখছে ভারতকে। প্রকাশ্যে মুখ না-খুললেও পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে নয়াদিল্লি। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, চিন ব্রহ্মপুত্রের বাঁকে বাঁধটি তৈরি করতে চলেছে। ফলে ব্রহ্মপুত্রের জল নিজেদের ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বেজিং। আর তাতেই চিন্তায় পড়েছে ভারত এবং বাংলাদেশ। চিনের বাঁধ ব্রহ্মপুত্রের স্বাভাবিক প্রবাহকে রুখে দিয়ে বর্ষায় উজানের দিকে আরও জল ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবার শুখা মরসুমে জলের অভাবও দেখা যেতে পারে।
তা ছাড়া ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র দু’টি পাতের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ফলে সংবেদনশীল ওই এলাকায় নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে কৃত্রিম উপায়ে বাধা দেওয়া হলে ভূমিকম্পের আশঙ্কাও থেকে যায়। চিন অবশ্য জানিয়েছে, তাদের তৈরি বাঁধ পরিবেশগত কোনও ক্ষতি করবে না। বাঁধ নির্মাণের সময় বাস্তুতন্ত্রের দিকেও খেয়াল রাখা হবে বলে জানিয়েছে বেজিং।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে বাঁধটি তৈরি করতে ১৩৭ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা) খরচ হতে পারে। বিশ্বের আর কোনও প্রকল্পে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়নি।
এর আগে ভারত বারবার চিনের সরকারকে অনুরোধ করেছে, নদীর উচ্চগতিতে যেন এমন কিছু বানানো না-হয়, যাতে নিম্নগতির কোনও ক্ষতি হয়। তার পরেও অবশ্য চিন ব্রহ্মপুত্রের উপর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করেছে।