ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। —ফাইল চিত্র।
তিনি নাকি দিল্লি থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়ে গিয়েছেন, দাবি করেছিল বিজেপি! কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরে সেই ‘নিখোঁজ’ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীই উদয় হলেন তাঁর রাঁচীর বাড়িতে। মঙ্গলবার দুপুরে একটি গাড়িতে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে নিজের বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়। গাড়ির জানলা দিয়ে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে অভিবাদনও জানান মুখ্যমন্ত্রী সোরেন। সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক পালাবদলের জল্পনার মধ্যেই দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন সোরেন।
ঘটনার শুরু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার পর। বিহারের পথেই ঝাড়খণ্ডেও পালাবদল হতে চলেছে বলে জল্পনা শুরু হয়। এর মধ্যেই রবিবার রাতে দিল্লিতে নামে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের বিমান। বিজেপির দাবি, শেষ বার সেখানেই দেখা গিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু তার পর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর। সোমবার হেমন্তের দিল্লির ঠিকানায় গিয়ে হাজির হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সেখানে বাড়ির বাইরে হেমন্তের ব্যবহার করা বিএমডব্লিউ গাড়িটি দেখতে পেলেও ভিতরে হেমন্তকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি, দিল্লির ঝাড়খণ্ড ভবনেও পাওয়া যায়নি তাঁকে। অবশেষে তাঁর দিল্লির ফাঁকা বাড়িতেই তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৩৬ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বিজেপিও ঘোষণা করে দেয়, ইডির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন হেমন্ত।
সোমবার এক ধাপ এগিয়ে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি প্রধান বাবুলাল মারান্ডি ১১ হাজার টাকা নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেন হেমন্তের খোঁজ দেওয়ার জন্য। তাতে অবশ্য বিশেষ লাভ হয়নি। অন্য দিকে, হেমন্তের দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) শুরু থেকেই বলে আসছিল, তাদের সঙ্গে হেমন্তের যোগাযোগ রয়েছে। ঝাড়খণ্ড সরকারের জেএমএমের জোট সঙ্গী কংগ্রেসও বলে হেমন্তকে ‘নিখোঁজ’ বলে দাবি করে আসলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার ষড়যন্ত্র করছে ইডি।
এর মধ্যেই বিজেপি সাংসদ তথা ঝাড়খণ্ডের নেতা নিশিকান্ত দুবে এক্স হ্যান্ডেলে জানান, ‘‘ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সোরেনের স্ত্রী কল্পনার নাম ঘোষণার পরিকল্পনা করছে জেএমএম। এ জন্য কংগ্রেস এবং ঝাড়খণ্ডের বিধায়কদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক ডেকেছেন হেমন্ত। বাক্সপ্যাঁটরা খুব শীঘ্রই রাঁচীতে পৌঁছতে চলেছেন তাঁরা।’’ এই জল্পনার মধ্যেই রাঁচীতে নিজের বাড়িতে এসে হাজির হলেন হেমন্ত।
অবৈধ ভাবে জমির মালিকের নাম বদলের একটি মাফিয়া চক্র এবং অবৈধ খাদানের মামলার সঙ্গে যোগসূত্রে হেমন্তের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইডি। এই মামলায় ইতিমধ্যেই ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ইডি।