রঘুবর দাস ও হেমন্ত সোরেন।
ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা ভোটের ফল বেরোবে আজ, সোমবার। কয়েক ঘন্টার মধ্যে জানা যাবে রঘুবর দাসের নেতৃত্বে বিজেপি ফের আসছে ঝাড়খণ্ডে,না কি হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বে বিরোধী দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও তার জোট শরিক কংগ্রেস ও আরজেডির সঙ্গে মিলে সরকার গড়তে চলেছে।
বুথ-ফেরত সমীক্ষায় আভাস মিলেছে ঝাড়খণ্ডে ফিরছে না বিজেপি। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস ও আরজেডির জোটকে এগিয়ে রেখেছে একাধিক বুথ-ফেরত সমীক্ষা। আশায় বুক বেঁধেছে বিরোধী দল। যদিও জেতার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি। বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, চলতি বছরে লোকসভা ভোটের সময়েও বিরোধী শিবির বলেছিল রাজ্যে বিজেপির অবস্থা শোচনীয়। ভোটের ফল বেরোলে দেখা গেল, ঝাড়খণ্ডের মানুষ বিজেপিতেই ভরসা রেখেছেন।
জেতার ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী দুই পক্ষই রাঁচীর বিভিন্ন দোকানে ফুলের মালা ও প্রচুর লাড্ডুর অর্ডার দিয়ে রেখেছে। বিজেপি গেরুয়া ও কংগ্রেস সবুজ আবিরেরও অর্ডার দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বৈচিত্রে ঐক্যের কথা শোনালেন মোদী, আশ্বাস দেশের মুসলমানদের
এ বারের ভোটে বেশ কয়েকটি নজরকাড়া আসন রয়েছে। সব থেকে বেশি নজর থাকবে জামশেদপুর-পূর্ব কেন্দ্রের দিকে। সেখানে লড়াই মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর ও সদ্য বিজেপি ছেড়ে নির্দল হয়ে লড়া মন্ত্রী সরযূ রায়। বিজেপি টিকিট না-দেওয়ায় রঘুবর সরকারের খাদ্যমন্ত্রী সরযু পদত্যাগ করে লড়ছেন নির্দল হিসেবে। দুমকায় বিজেপির লুইস মারান্ডি বনাম ঝাড়াখণ্ড মুক্তি মোর্চার হেমন্ত সোরেনের মধ্যে কে জেতেন, নজর থাকবে সকলের।
রাজনীতির লোকজন বলছেন, কেন্দ্রে ও রাজ্যে বিজেপি সরকার। তা সত্ত্বেও বুথ-ফেরত সমীক্ষায় বিজেপির না-ফেরার ইঙ্গিত থেকে আপাত ভাবে স্পষ্ট, ঝাড়খণ্ডে বিজেপির অবস্থা ভাল নয়। যদিও বুথ-ফেরত সমীক্ষার ফল না মেলার বিস্তর নজির রয়েছে।
ঝাড়খণ্ডে বিজেপি একা লড়েছে। দলেরই অনেক নেতা রঘুবরকে পছন্দ করেন না। যার প্রভাব পড়তে পারে ইভিএমে। বেশ কয়েক জন বিজেপি নেতা টিকিট না-পাওয়ায় অসন্তোষও রয়েছে দলে। ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন বা আজসু পার্টির সঙ্গে বিজেপির জোট ভাঙার জন্য রঘুবরকেই দায়ী করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, এ বার আজসু যদি চার-পাঁচটা আসন পায়, তবে তা বিরোধীদের ঝুলিতেই যাবে।
গত লোকসভা ভোটে খুঁটি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন মুণ্ডাকে জেতানোর জন্য রঘুবর সাহায্য করেননি বলেও অভিযোগ। ফলে অর্জুনের সমর্থকেরা এ বার বিধাননসভা ভোটে কী ভূমিকা নিচ্ছেন তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। আদিবাসীদের ভোট কতটা বিজেপির ঝুলিতে যাবে, তার উপর বিজেপির ফলাফল অনেকটা নির্ভর করছে বলে মনে করছেন অনেকে।
বিজেপির নেতাদের মতে, গত পাঁচ বছরে তাঁদের সরকার সাধারণ মানুষ, বিশেষত আদিবাসীদের জন্য প্রচুর কাজ করেছে। পাকা বাড়ি, শৌচালয় হয়েছে। রাস্তা হয়েছে। সার্বিক ভাবে অর্থনীতিতে চাঙ্গা হয়েছে ঝাড়খণ্ড। পাঁচ বছরে রাজ্যে মাওবাদী হামলাও কমেছে অনেকটা। এই সব দাবি পাল্টা-দাবির আয়ু আর একটি রাত। সোমবার স্পষ্ট হয়ে যাবে ঝাড়খণ্ড কী চাইছে।