Afghanistan

JeM: কাবুলের জেল থেকে মুক্ত জইশ জঙ্গিদের প্রশিক্ষণে মাসুদ, ভারতে হামলার ছক: রিপোর্ট

রিপোর্টে দাবি, জেইএম-এর প্রধান মাসুদ আজহার ১০০ জন জঙ্গিকে শেখাচ্ছেন, কী ভাবে কোন কোন পথে ভারতে ঢুকে পড়তে হবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২১ ১৪:৫১
Share:

ভারতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরা। -ফাইল ছবি।

তালিবানের দখলে কাবুল চলে যাওয়ার পর সেখানকার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে ১০০-র বেশি জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম) জঙ্গি। জম্মু-কাশ্মীর-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঢুকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটানো ও নানা ধরনের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। জেইএম নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের নেটমাধ্যমে দেওয়া বিভিন্ন পোস্ট থেকে ভারতীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, জেইএম-এর প্রধান মাসুদ আজহার এখন ওই ১০০ জন জঙ্গিকে শেখাচ্ছেন কী ভাবে, কোন পথে ভারতে ঢুকতে হবে। কোন পথে কাশ্মীরে ঢোকা সহজ হবে। ভারতের বিভিন্ন গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে।

Advertisement

এক গোয়েন্দা-কর্তার কথায়, “গত সপ্তাহেই মাসুদ আজহার ওই জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল বলে খবর মিলেছে।” তাঁর বক্তব্য, “সেই সব বৈঠকেই ভারতে আঘাত হানার ব্যাপারে ওই জঙ্গিদের সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে মাসুদ। বলেছে, কাশ্মীর-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক বড়সড় বিস্ফোরণ বা সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক দ্রুত কষে ফেলতে। এ ব্যাপারে তালিবানের তরফে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে জেইএম নেতৃত্বকে। জেইএম নেতৃত্বের সঙ্গে তালিবান শীর্ষকর্তাদের বৈঠকও হয়েছে।”

জইশ-ই-মহম্মদের বহু জঙ্গিকে আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের জেলে পুরে রেখেছিল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির সরকার। কিন্তু গত ১৫ অগস্ট তালিবরা কাবুল দখল করার পর থেকেই কপাল খুলতে শুরু করে জেইএম জঙ্গিদের। বিভিন্ন প্রদেশের জেল খুলে দিয়ে জেইএম জঙ্গিদের মুক্তি দিতে শুরু করে তালিবরা।

Advertisement

ভারতের বিভিন্ন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা খবর পেয়েছে, আফগানিস্তানের বিভিন্ন জেল থেকে ছাড়া পাওয়া সেই জেইএম জঙ্গিদের মধ্যে অন্তত ১০০ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে ভারতে পাঠানোর জন্য। তাদের প্রথম লক্ষ্য জম্মু-কাশ্মীর।

ভারতীয় গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন, কাবুল দখল করার পরপরই তালিবদের সঙ্গে কয়েক দফার বৈঠকে বসেছিলেন জেইএম-এর শীর্ষস্তরের নেতারা। রিপোর্টে দাবি, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ছলে বলে কৌশলে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অনেক দিন ধরেই। কখনও সফল হচ্ছে, কখনও বা ব্যর্থ। কাবুলে তালিবদের সঙ্গে জেইএম নেতাদের গত সপ্তাহের বৈঠকের পর এ বার পাক সেনাবাহিনী ও পাক সন্ত্রাসবাদীরাও উৎসাহিত হয়ে উঠবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আফগানিস্তানে যে ফের তালিবরা শক্তিশালী হয়ে উঠতে চলেছে, তার খবর এসেছিল কয়েক মাস আগেই। সে ক্ষেত্রে তাদের মদত পেয়ে কাশ্মীরে জেইএম জঙ্গিরা যে আবার উগ্রমূর্তি ধরবে, সেটাও আঁচ করা হয়েছিল। তাই কাশ্মীরে আত্মগোপন করে থাকা জেইএম জঙ্গিদের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু করে ভারতের নিরাপত্তাবাহিনী।

গত ৩১ জুলাই ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলওয়ামার ত্রালে হাঙ্গালমার্গের অরণ্যে লুকিয়ে থাকা জেইএম-এর দুই পাক কমান্ডার মহম্মদ ইসমাইল ও আবদুল রশিদ ঘাজি নিহত হয়। ২০১৯-এর ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিল এই দু’জনই। এরা উপত্যকার যুবকদের জেইএম-এ যোগ দেওয়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিল অনেক দিন ধরেই।

গোয়েন্দাদের অনুমান, এ বার এই দু’জনের নিহত হওয়ার ঘটনার বদলা নিতে পারে জেইএম জঙ্গিরা। তারই প্রস্তুতিতে গত সপ্তাহে কাবুলে তালিব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয় জেইএম নেতৃত্বের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement