নিখোঁজ কোটার পড়ুয়া পীযূষ কাপাসিয়া। ছবি সংগৃহীত।
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া ভিড় করেন রাজস্থানের কোটায়। ‘কোচিং হাব’ নামে পরিচিত কোটা গত কয়েক বছর ধরেই পড়ুয়াদের ‘আত্মহত্যা’র কারণেই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। কিন্তু দিন কয়েক ধরে ‘আত্মহত্যা’ নয়, পড়ুয়া নিখোঁজের ঘটনা ঘটছে। গত মঙ্গলবার থেকে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা পীযূষ কাপাসিয়া নামে এক পড়ুয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে খবর।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পীযূষ কোটায় জেইই-র প্রস্তুতি নিতে গিয়েছিলেন। গত দুই বছর ধরে কোটার ইন্দ্র বিহারের এক হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করছিলেন। ‘নিখোঁজ’ পড়ুয়ার বাবা মহেশচাঁদ জানিয়েছেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে পীযূষ তাঁর মাকে ফোন করেছিলেন। বেশ কিছু ক্ষণ কথা হয় দু’জনের। তার পর থেকে পীযূষকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। মহেশচাঁদের কথায়, ‘‘আমরা সেই থেকে ছেলেকে বার বার ফোন করছি। কিন্তু ওর ফোন বন্ধ।’’
তার পরই মহেশ কোটায় যেখানে পীযূষ থাকতেন সেখানে যোগাযোগ করেন। বাড়ির মালিক বা পীযূষের বন্ধুরা কেউই কিছু বলতে পারেননি। পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন পীযূষের বাবা। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগ পাওয়ার পরেই সন্ধান শুরু হয়েছে। নিখোঁজ পড়ুয়ার বন্ধুবান্ধব, চেনা পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কী ভাবে তিনি হারিয়ে গেলেন, ওই পড়ুয়া অবসাদে ভুগছিলেন কি না, সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খুব তাড়াতাড়িই পীযুষের খোঁজ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তারা।
এমন ঘটনা কোটায় নতুন নয়। গত এক সপ্তাহের মধ্যে আরও দুই পড়ুয়া নিখোঁজের খবর মিলেছে কোটা থেকে। ঠিক এক সপ্তাহ আগে একই ভাবে কোচিং ক্লাসে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় বছর ষোলোর এক পড়ুয়া। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কোটা সংলগ্ন একটি জঙ্গলে ঢুকছে সে। তার পর থেকে তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
গত শনিবারও এক পড়ুয়ার নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল। যুবরাজ নামে বছর আঠারোর ওই পড়ুয়া শনিবার সকাল ৭টায় কোচিং ক্লাসে যাবেন বলে হস্টেল থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পর থেকে আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, যুবরাজ নামে ওই পড়ুয়া কোচিং ক্লাসে যাওয়ার আগে হস্টেলের ঘরেই মোবাইল ফেলে গিয়েছিলেন। সোমবার সকাল পর্যন্তও তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি। পর পর এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশও।
পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় বার বার কোটা খবরে উঠে এসেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। গত বছর প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ২ জন করে ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে কোটায়। আর নতুন বছরে দেড় মাসের মধ্যেই চার জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। ‘আত্মহত্যা’ আটকাতে কোটা প্রশাসন একাধিক পদক্ষেপ করেছে। পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে আত্মহত্যার ঘটনা আটকানোয় সে ভাবে সাফল্য আসেনি কোটাতে।