ছবি: সংগৃহীত।
ইন্ডিয়ান কারি, তবে জাপানি স্বাদের ছোঁয়া মাখানো। খাদ্যরসিকদের জন্য সে কারি এ দেশে নিয়ে আসার কৃতিত্ব দাবি করতেই পারেন দিল্লির এক স্থানীয় বাসিন্দা রবিন শ্রীবাস্তব। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বছরে সেই কারি চেখে দেখতে পারবেন দিল্লিবাসীরা।
গত জুলাইয়ে জাপানি রেস্তরাঁর একটি চেন ঘোষণা করেছে, দিল্লিতে ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী তারা। সেখানে তাদের রেস্তরাঁয় মিলবে ‘কারি রাইস’। থকথকে ভাতের উপর শোয়ানো সব্জি আর মাংসের পরত। তার উপর ছড়ানো গাঢ় ব্রাউন সস।
কী ভাবে ‘কারি রাইসে’র সন্ধান পেলেন রবিন? সালটা ২০১৫। বহুজাতিক সংস্থা মিৎসুই অ্যান্ড কোম্পানির কর্মী রবিনকে তাদের টোকিয়ো অফিসে দু’বছরের জন্য বদলি করা হয়। টোকিয়োতে থাকাকালীনই ভারতীয় খাবারের খোঁজে এ ধার-ওধার ঘোরাঘুরি শুরু করেন রবিন। পেয়েও যান একটা রেস্তরাঁ। শহরের যেখানে থাকতেন, সেই রাস্তার উল্টো দিকেই ছিল কোকো ইচিবানওয়া। সেখানেই প্রথম ‘কারি রাইস’ চেখে দেখেন রবিন। তাতে এতটাই মুগ্ধ হন তিনি যে দেশে ফিরে ট্রেনিংয়ের রিপোর্টে মিৎসুই অ্যান্ড কোম্পানির শীর্ষ কর্তাদের সুপারিশ করেন, এ দেশে যাতে ওই রেস্তরাঁ খোলা যায়।
আরও পড়ুন: চাঁদে হাঁটছেন মহাকাশচারী আর পাশে স্কুটার থামিয়ে দেখছেন সাধারণ মানুষ
আরও পড়ুন: চিন্ময়ানন্দ মামলায় এ বার অভিযোগকারিণীকেই আটক করল পুলিশ
রবিনের ওই আইডিয়া পছন্দ হয় মিৎসুই কর্তৃপক্ষের। কোকো ইচিবানওয়া চেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। সে প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান কোকো ইচিবানওয়া কর্তৃপক্ষ। এর পরেই মিৎসুইয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে এ দেশে রেস্তরাঁ খোলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। আপাতত ভারতের মাটিতে প্রথম দশ বছরে ৩০টি রেস্তরাঁ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। জাপানে তো বটেই, গোটা দুনিয়াতেই বেশ জাঁকিয়ে ব্যবসা করছেন তাঁরা। নয় নয় করে সে দেশেই রয়েছে তাঁদের বারোশ’র বেশি রেস্তরাঁ।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে কিশোরীকে গণধর্ষণ করে ভিডিয়ো তুলল দুষ্কৃতীরা
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে কিশোরীকে গণধর্ষণ করে ভিডিয়ো তুলল দুষ্কৃতীরা
তবে ভারতের মানুষজনকে কী ভাবে জাপানি স্বাদের ‘কারি রাইস’ খাওয়াবেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই তো এ নিয়ে অনেকে হাসাহাসি শুরু করেছেন! বলাবলি হচ্ছে, শেষমেশ জাপানের রেস্তরাঁ ভারতীয়দের ‘কারি’ খাওয়াবেন? তবে তাতে দমে যাচ্ছেন না কোকো ইচিবানওয়ার প্রেসিডেন্ট মামোরু কুজুহারা। এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি তাইল্যান্ডের উদাহরণ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাইল্যান্ডে ব্যবসার আগেও এমন ধরনের কথা উঠেছিল। তবে এখন সেখানে তাঁদের সংস্থার ২৯টি রেস্তরাঁ রয়েছে।
‘কারি রাইস’ যে এ বার ভারতে মিলবে, তা নিয়ে খুশি রবিন। সেই সঙ্গে দেশের খাদ্যরসিকরা যে তাঁর মতো এই খাবারও পছন্দ করবেন, তা নিয়েও নিশ্চিত তিনি। রবিন বলেন, ‘‘এ দেশের মানুষেরা বিদেশি কুইজিন পছন্দ করেন। তাঁরা র্যামেন, সুশি, সাশিমি বা টেম্পুরার মতো জাপানের খাবারও পছন্দ করেন।’’
রবিনের মতোই আশাবাদী কোকো ইচিবানওয়া। এ দেশের খাদ্যরসিকদের উদ্দেশে কুজুহারা বলেন, ‘‘আমাদের সংস্কৃতির ছোঁয়া রয়েছে, ভারতীয়দের এমন কমফর্ট ফুড খাওয়াতে চাই।’’ তিনি জানিয়েছেন, বিফ ছাড়া কেবলমাত্র সব্জি আর অন্যান্য মাংস দিয়ে সাজানো থাকবে ‘কারি রাইস’। আর দাম? সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, একটা চিকেন কাটসু কারি মিলবে মাত্র ৪৯০ টাকায়!