গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
চিনের সঙ্গে সীমান্ত সঙ্ঘাত নিয়ে ভারতের পাশেই দাঁড়াল জাপান। শুক্রবার ভারতে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাতোশি সুজুকি সাফ জানিয়ে দেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-য় স্থিতাবস্থা ভঙ্গ করতে পারে এমন একতরফা কোনও কাজকেই সমর্থন করে না জাপান। জাপান যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষপাতী, তা-ও উল্লেখ করেন সাতোশি।
চিনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে সঙ্ঘাতের উত্তাপ বেড়েছে গালওয়ান সংঘর্ষের পর। দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার আঁচ গিয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও। ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে এ দিন বৈঠক করেন ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত সাতোশি সুজুকি। এলএসি-র ঘটনাবলি সম্পর্কে হর্ষবর্ধন শ্রিংলার থেকে বিস্তারিত জানেন তিনি। তার পরই এ নিয়ে টুইট করেন সুজুকি। বৈঠকের কথা উল্লেখ করে সুজুকি লেখেন, ‘‘ভারত সরকার যে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের নীতি নিয়েছে তা জানতে পারলাম। জাপানও আশা করে যে, আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে। স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হয় এমন যে কোনও একতরফা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জাপান।’’
অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও ভারত এবং চিনের মধ্যে সীমান্ত সঙ্ঘাত নিয়ে বার্তা দিয়েছিল টোকিও। জাপান সরকারের তরফে জানানো হয় যে, তারা আশা করে বিষয়টি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে এগোবে। জাপানি বিদেশমন্ত্রক একটি বার্তায় জানিয়ে দেয়, ‘‘জাপানের অবস্থান হচ্ছে, পরিস্থিতির উপর খুব কাছ থেকে নজর রাখা কারণ স্থানীয় স্থিতাবস্থার উপর এর প্রভাব পড়তে পারে। জাপান সরকার মনে করে যে, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।’’
আরও পড়ুন: ইতিহাস সাক্ষী, মুছে যায় বিস্তারবাদীরা: লাদাখে দাঁড়িয়ে চিনকে বার্তা মোদীর
জাপানি রাষ্ট্রদূতের এ দিনের বক্তব্য অবশ্য কয়েক ধাপ এগিয়ে। সীমান্তে চিন যে ‘একতরফা’ পদক্ষেপ করছে তা বুঝিয়ে দিয়েছে সুজুকির বক্তব্য। কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিওরিটি ডায়ালগ (কিউএসডি) অথবা ‘কোয়াড’ নামে পরিচিত গোষ্ঠীর মধ্যেই রয়েছে ভারত এবং জাপান। ওই গোষ্ঠীরই অপর দুই সদস্য আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া। ২০১৭-য় ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় কৌশলগত গুরুত্ব এবং পারস্পরিক সহায়তা বাড়ানোর লক্ষ্যেই ওই মঞ্চ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সেই গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে গালওয়ান সংঘর্ষ নিয়ে এ বার জোরাল বার্তা দিল জাপানও।
আরও পড়ুন: ‘কৃত্রিম বাধা’ ভারতেরই ক্ষতি করবে, পাল্টা প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি চিনের
প্রসঙ্গত ডোকলামে ভারত এবং চিনের টানটান স্নায়ুযুদ্ধ নিয়েও ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল টোকিও। জাপানি রাষ্ট্রদূতের এ দিনের বিবৃতি বেজিংয়ের রক্তচাপ কিছুটা বাড়িয়ে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।