আজাদ দল ছাড়ায় চাপে সনিয়ার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। ফাইল চিত্র।
গুলাম নবি আজাদ দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করার পর থেকেই পদত্যাগের হিড়িক শুরু হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর কংগ্রেসে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রশাসিত ওই অঞ্চলের শতাধিক কংগ্রেস নেতা দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তারা চন্দ এবং প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার গুলাম হায়দর মল্লিক।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মঙ্গলবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠি পাঠিয়ে এক সঙ্গে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন চন্দ-সহ ৬৪ জন কংগ্রেস নেতা। প্রাক্তন মন্ত্রী মনোহরলাল শর্মা, আব্দুল মজিদ ওয়ানি, গারু রাম এবং প্রাক্তন বিধায়ক বলবান সিংহ রয়েছেন সেই তালিকায়। এর আগে গত সপ্তাহে আজাদের সমর্থনে দল ছেড়েছিলেন, তিন প্রাক্তন মন্ত্রী— আব্দুল রশিদ, জিএম সরুরি এবং আরএস চিব।
পাশাপাশি, আমিন ভট, গুলজার আহমেদ ওয়ানি, মহম্মদ আক্রমের মতো প্রভাবশালী প্রাক্তন বিধায়কেরাও কংগ্রেস ছেড়ে আজাদের নয়া দলে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সাম্প্রতিক জেলা পরিষদ নির্বাচনে কাশ্মীর উপত্যকায় ভাল ফল করা আপনি পার্টির বেশ কয়েক জন নেতাও ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিও আজাদের দলে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
শুক্রবার কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদে ইস্তফা দেওয়ার পরেই নতুন দল গড়ে জম্মু ও কাশ্মীরে পরবর্তী বিধানসভা ভোটে লড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আজাদ। যদিও তিনি বলেন, ‘‘আমি বিজেপির সহযোগী হব না।’’ সংখ্যালঘু ভোটের লক্ষ্যেই আজাদের এই কৌশল বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজাদ এর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আজাদ শিবিরের একাধিক নেতাও তাঁকে ‘জম্মু ও কাশ্মীরের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী’ হিসেবে তুলে ধরতে সচেষ্ট হয়েছেন ইতিমধ্যেই।
চলতি বছরের শেষে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে ধরে নিয়ে ইতিমধ্যেই ‘সক্রিয়তা’ শুরু করেছে আজাদ শিবির এবং বিজেপি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু প্রভাবিত ওই রাজ্যে আজাদই পদ্ম-শিবিরের সেরা বাজি হতে পারেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা। কারণ, মুসলিম হলেও আজাদ কাশ্মীর উপত্যকার নেতা নন। উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে কখনওই তাঁর সখ্য ছিল না। ফলে অতীতে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন করে বিজেপিকে যে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল, এ ক্ষেত্রে তার সম্ভাবনা নেই।
গত কয়েক মাস ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন আজাদ। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় রাহুল গাঁধীর ইডি দফতরে হাজিরার সময় গোটা দল রাস্তায় নামলেও তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এর পর গত সপ্তাহে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী জম্মু ও কাশ্মীরের আসন্ন বিধানসভা ভোটের জন্য গঠিত দলীয় নির্বাচনী প্রচার কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন আজাদকে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।