এভাবেই পথে নেমেছিলেন জামিয়ার ছাত্ররা। ফাইল চিত্র
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে যে দিন প্রথম উত্তপ্ত হয়েছিল জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর, সে দিনই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু পড়ুয়া শিক্ষামূলক ভ্রমণে হরিয়ানা গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তাঁরা অভিযোগ জানালেন, পানিপথের কিছু বাসিন্দা তাঁদের হুমকি দিয়েছিল, ‘‘এখানে থেকে চলে যাও, না-হলে ভুগতে হবে।’’ পড়ুয়াদের দাবি, ভয়ে সফরসূচি ছোট করে ফিরে এসেছেন তাঁরা।
পানিপথ পুলিশের দাবি, তাদের কাছে এমন কোনও অভিযোগ আসেনি। কিন্তু পড়ুয়াদের বক্তব্য, পুলিশই তাঁদের দিল্লি ফিরে যেতে বলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজসেবা (সোশ্যাল ওয়ার্ক) বিভাগের ৪৩ জনের একটি দল দশ দিনের ক্যাম্প করতে হরিয়নার পাত্তি কালয়ানা, হলদানা ও গারহি ত্যাগান গ্রামে যায়। দলের এক জন জানালেন, রবিবার সকালে রওনা হয়েছিলেন। অন্য আর এক জন ধরিয়ে দিলেন, পাত্তি কালয়ানা গ্রামের কাছে গাঁধী আশ্রমে উঠেছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবারই ওই ঘটনার সম্মুখীন হন সকলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘দু’জন শিক্ষক ও দু’জন অশিক্ষক কর্মী তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। গ্রামগুলোতে সচেতনতা ছড়াতেই আমাদের শিবির। ৪৩ জনের দল তিন ভাগে ভাগ করে তিনটি গ্রামে আমরা প্রচার চালাচ্ছিলাম। তৃতীয় দিন আমরা পাত্তি কালয়ানা গ্রামে যাই। প্রাইমারি স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলে যাই আমরা। দুপুরে খেতে যখন গ্রাম থেকে বেরোচ্ছি, একটা দোকানে কয়েক জন লোক আমাদের প্রশ্ন করতে শুরু করল। যেই বলেছি আমরা জামিয়া থেকে এসেছি, ওরা ক্ষেপে গেল।’’
আর এক পড়ুয়ার মন্তব্য, ‘‘ভিড়ের মধ্যে এক জন বলল, আমরাই নাকি দিল্লিতে কিছু গোলমাল পাকিয়ে এখানে লুকোতে এসেছি।’’ পড়ুয়াদের অভিযোগ, লোকগুলোকে বোঝাতে যেতে তারা আরও খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করে। আশপাশ থেকে লোক ডাকতে শুরু করে তারা। ‘‘ভিড় ক্রমশ বাড়তে শুরু করে, আমরা ভয়ে কাঁপছিলাম,’’ বললেন এক পড়ুয়া। তাঁর কথায়, ‘‘একটা লোক সরাসরি হুমকি দেয়, এখান থেকে চলে না-গেলে ভুগতে হবে।’’ পরের দিন ফের কিছু লোক তাঁদের খোঁজে গাঁধী আশ্রমে এসেছিল। এর পরে আর ঝুঁকি নেননি জামিয়ার পড়ুয়ারা। এক ছাত্র বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে যাই। কিন্তু ওরা আমাদের দিল্লি ফিরে যেতে বলে।’’ যদিও পানিপথের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, কোনও পড়ুয়া তাদের কাছে আসেননি।