—ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক সম্প্রতি কোনও প্রকল্পে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে খসড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হলে পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে বারেবারে অভিযোগ করেছেন পরিবেশবিদেরা। খসড়াটিতে পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখার বিষয়টি লঘু হয়ে যেতে পারে, এই অভিযোগে পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ফ্রাইডেজ় ফর ফিউচার আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবকরা সরব হয়েছিলেন। এ নিয়ে অনলাইনে নিজেদের মতামত জানানোর ডাকও দেন তাঁরা। কিন্তু এ জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ বা বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। তার পরেই নরেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে কণ্ঠরোধের অভিযোগ নতুন মাত্রা পায়। বিষয়টি নিয়ে সরব হন দেশ-বিদেশের পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে গলা মেলান বিরোধীরাও। এ বারে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের বিরুদ্ধে সরব হলেন প্রাক্তন পরিবেশমন্ত্রী জয়রাম রমেশ।
আজ ওই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান জয়রাম রমেশ। তাঁর বক্তব্য, প্রস্তাবিত খসড়া কার্যকর হলে অবৈধ প্রক্রিয়াকে বৈধতা দেওয়া হবে। যা উন্নয়নের পরিপন্থী। এর ফলে জোরপূর্বক জমি কেড়ে নেওয়ার বিষয়টিতে মদত জোগানো হবে।
জাভড়েকরের পাশাপাশি আজ রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকেও চিঠিতে রমেশ জানান, পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ কোনও বোঝা নয়। বরং সুস্থায়ী উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য ও কল্যাণের ক্ষেত্রে আবশ্যিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। রমেশ আরও জানান, কোনও রকম অডিট, মূল্যায়ন, বিশ্লেষণ কিংবা গবেষণার উপরে ভিত্তি করে এই প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলি করা হয়নি। বরং মনে হচ্ছে, পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়টি যেন সরকারের কাছে বোঝাস্বরূপ। এর পরেই প্রাক্তন পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ‘পরিবেশ ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।’ কিন্তু প্রস্তাবিত খসড়াটি কার্যকর হলে তাঁর সেই বক্তব্যের মূল নির্যাসকেই উপেক্ষা করা হবে।’’
এই খসড়ায় পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়ায় জনশুনানির নোটিস পিরিয়ডের মেয়াদ কমিয়ে জনগণের সংযোগকেও কমানো হয়েছে বলে অভিযোগ রমেশের। পাশাপাশি রাজ্যের পরিবেশগত প্রভাব নির্ধারণ কর্তৃপক্ষকে নিয়োগের অধিকারও কেন্দ্রের হাতে দেওয়া হয়েছে। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী বলে অভিযোগ জানিয়েছেন রমেশ।