বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। ছবি: সংগৃহীত।
বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থাগুলি যখন তাদের সার্চ তালিকায় সংবাদ প্রতিবেদন তুলে ধরে এবং সেই সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে লাভের মুখ দেখে, তখন সেই লাভের একটা অংশ সংবাদমাধ্যমের কাছেও যাওয়া উচিত বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ডিজিটাল নিউজ় পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক আলোচনাচক্রে বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর এবং তথ্য ও সম্প্রচার সচিব অপূর্ব চন্দ্র শনিবার এই বিষয়ে জোর দেন। নতুন ডিজিটাল ইন্ডিয়া আইনে এর সমাধান থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন তাঁরা।
সাংবাদিকতার ভবিষ্যত এবং ডিজিটাল ও ছাপাই সংবাদ শিল্পের আর্থিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের দুই প্রতিনিধিই ‘ভারসাম্যের অভাবে’র প্রশ্নটি তোলেন। অর্থাৎ সংবাদ প্রতিবেদন নির্মাণ (কনটেন্ট ক্রিয়েশন) এবং তার অর্থমূল্য নির্ধারণের (মনিটাইজ়েশন) ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভারসাম্যের অভাব থেকে যাচ্ছে বলে তাঁরা উল্লেখ করেন। বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থাগুলি তাদের সার্চ ইঞ্জিনে সংবাদ প্রতিবেদন রাখছে। তার থেকে বড় মাপের লাভও করছে। কিন্তু সংবাদনির্মাতারা তার ভাগ পাচ্ছেন না। ‘লভ্যাংশের ন্যায্য প্রাপ্য’ তাঁদের কাছে পৌঁছচ্ছে না। প্রযুক্তি সংস্থা এবং সংবাদনির্মাতার পারস্পরিক সম্পর্কে ‘বৈষম্য’ থেকে যাচ্ছে। সংবাদ শিল্পের আর্থিক অস্বচ্ছলতার সঙ্গে বিষয়টিকে যুক্ত করে দেখার কথা বলেন অপূর্ব।
অপূর্বের কথায়, ‘‘প্রযুক্তি সংস্থাগুলি অন্যের তৈরি কনটেন্ট ব্যবহার করে নিজেরা সমষ্টিসাধক বা অ্যাগ্রিগেটর হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু ডিজিটাল সংবাদ প্ল্যাটফর্ম, যারা আদতে সেই সব সংবাদ প্রতিবেদন নির্মাণ করে, তারা তাদের প্রাপ্য পাচ্ছে না। সংবাদ শিল্পকে এগোতে হলে এর সমাধান প্রয়োজন।’’ অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, ইইউ-এর দেশগুলি ইতিমধ্যেই এই মর্মে আইন এনেছে বলেও জানান তিনি।
অপূর্বের সুরে সুর মিলিয়েই প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘সংবাদ প্রতিবেদন নির্মাণ এবং তার অর্থমূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভারসাম্যের অভাব দূর করার ব্যাপারে আমরা সক্রিয় হতে পারব বলে আশা করছি।’’ ভিডিয়ো লিঙ্কের মাধ্যমে বক্তব্য জানাতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, ইন্টারনেটের মধ্যে কাঠামোগত ভাবেই গভীর বৈষম্য রয়ে গিয়েছে। তার ফলে ছোট কনটেন্ট নির্মাতারা বিশেষ ভাবে মার খাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দু’বছর আগেই সেখানে আইন পাশ হয়েছে। যার ফলে ফেসবুক-গুগল ইত্যাদি সংস্থাকে সেখানে অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ব্যবহার করতে হলে টাকা দিতে হয়। আসন্ন ডিজিটাল ইন্ডিয়া আইনেও অনুরূপ ব্যবস্থা থাকতে চলেছে বলে আশ্বাস দেন তিনি।