ছবি: পিটিআই।
রাত পোহালে উত্তরপ্রদেশের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। কিন্তু ‘মায়ার খেলা’ অব্যাহত। গত সপ্তাহে বিএসপি নেত্রী মায়াবতী বলেছিলেন, ‘‘এসপি-কে হারাতে হলে প্রয়োজনে বিজেপি-কেও ভোট দিতে হবে।’’ আজ বললেন, বিজেপি-র সঙ্গে তাঁকে জড়ানোর চক্রান্ত হচ্ছে! আদর্শগত ভাবে দু’দলের কোনও মিল নেই।
পাশাপাশি রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরের মতে, আজ রাজ্যসভার ১০টি আসনের ফলাফলেও বিজেপি আর মায়ার করমর্দন স্পষ্ট। ৮টি আসনে প্রত্যাশিত ভাবেই জিতেছে বিজেপি। জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ পুরী, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহ প্রমুখ। নবম আসনে বিজেপি প্রার্থী না দেওয়ায় সেটি জিতেছেন মায়াবতীর বিএসপি প্রার্থী রামজী গৌতম। একার ক্ষমতায় বিজেপি এবং এসপি-র সঙ্গে লড়ে মায়াবতীর ওই আসন জেতার মত সংখ্যা ছিল না। বাকি আসনটি জিতেছেন এসপি প্রার্থী, দলের প্রবীণ নেতা রামগোপাল যাদব।
সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যসভার একটি আসন বিএসপি-কে ছেড়ে দিয়ে আসন্ন বিধানসভা উপনির্বাচনগুলিতে মায়াবতীর কাছ থেকে সুবিধা আদায় করে নিয়েছে বিজেপি। শুধু এই উপনির্বাচনগুলিই নয়, বাইশের বিধানসভা ভোটেও মায়াবতীর পরোক্ষ সমর্থন ও সহায়তা পাওয়ার আশা রাখে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: ভোটের বিহারে আজ দ্বৈরথে মোদী-রাহুল
তবে আজ মায়াবতী মুখে যেটা বলেছেন তা হল, “আমাদের আদর্শ সর্বজন সর্বধর্ম হিতায়। যা বিজেপি-র ঠিক উল্টো। তাদের পুঁজিবাদী, সাম্প্রদায়িক, বর্ণভিত্তিক আদর্শের সঙ্গে আমাদের জোট হতে পারে না। “তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি তাঁর সাম্প্রতিক বিবৃতিটি নিয়ে অপপ্রচার করছে যাতে বিএসপি-র থেকে মুসলিম ভোটাররা বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। অথচ গত সপ্তাহেই মায়া বলেছিলেন, বিধানসভা এবং রাজ্যসভার ভোটে এসপি-র প্রার্থীদের পরাজয় নিশ্চিত করতেই হবে। প্রয়োজনে বিজেপি-র প্রার্থীকেও ভোট দিতে হবে। তাঁর এই মন্তব্যের পরেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল কংগ্রেস। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা টুইট করেছিলেন, ‘‘এর পরে আর কিছু বলার থাকে না।’’
বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, গত বছর লোকসভা ভোটের পরে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ সম্পর্কে সুর নরম করে ফেলেছেন মায়াবতী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একটি পুরনো মামলাকে সামনে নিয়ে এসে যতই চাপ বাড়িয়েছে, ততই মায়াবতীকে ঝাঁঝালো বিরোধিতার লাইন ছেড়ে দেখা গিয়েছে মোদী সরকার সম্পর্কে মুখ না খুলতে। গত দেড় বছরে কোনও বিষয়েই বিরোধীরা সংসদের ভিতরে ও বাইরে পাশে পাননি মায়াবতীকে।
আরও পড়ুন: মোদী-চিনফিং তিন বার দেখা হবে নভেম্বরেই
তবে নিজের দলিত নেত্রীর ভাবমূর্তি সম্পর্কে সচেতন মায়া এখনও ভাঙছেন কিন্তু মচকাচ্ছেন না—এমনটাই মনে করছে উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক শিবির। আজ যে ভাবে তিনি সাফাই দিয়েছেন তাতে সেটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। বিজেপি-কে সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে বর্ণনা করার পাশাপাশি মায়া আজ বলেছেন, “আমি আগে যে বিবৃতি দিয়েছিলাম তার থেকে সরে আসছি না। কিন্তু এসপি এবং কংগ্রেস তার ভুল অর্থ প্রচার করেছে তাদের রাজনৈতিক লাভের জন্য। তাদের উদ্দেশ্য আমার দলের কাছ থেকে মুসলিম ভোট ছিনিয়ে নেওয়া।’’