—ফাইল চিত্র।
আগামীকাল, শুক্রবারই ঢাকা পৌঁছে বাংলাদেশ সফর শুরু করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তার আগে ওই পড়শি মুলুক থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়টি সামনে আসায় ফের ঢিল পড়ল রাজ্য রাজনীতির মৌচাকে।
মঙ্গলবার অসমে নির্বাচনী জনসভায় বাঙালি প্রার্থীর জন্য প্রচারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, ‘‘বিজেপির লড়াই শুধু অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে।’’ তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া এখনও ঢাকা পর্যন্ত না-গড়ালেও, তীব্র বিরোধিতায় আসরে নেমেছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের বক্তব্য, বাংলাদেশে আসন্ন কূটনৈতিক সফরকে কাজে লাগিয়ে ভোটের রাজনীতি করছে মোদী সরকার।
শুক্রবার বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। সে দিন ঢাকা পৌঁছে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন মোদী। শ্রদ্ধা জানাবেন জাতীয় স্মৃতিসৌধ সাভারে। শনিবার যাবেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। সেখানে ঈশ্বরীপুরে যশোরেশ্বরীর মন্দিরে পুজো দেবেন। সে দিন ওড়াকান্দিতে মতুয়াদের মন্দিরেও যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা সুখেন্দুশেখর রায় আজ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ এই সময়কেই কেন মতুয়া মন্দির দর্শনের জন্য বেছে নিলেন, তা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তিনি ভোটের রাজনীতি করছেন। আগে তো কখনও বাংলাদেশে গিয়ে মতুয়া মন্দিরে যাওয়ার কথা তাঁর মনে হয়নি!’’
অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে (রাজনাথের বক্তব্যে) রাজনীতিরও নিন্দা করেছেন সুখেন্দু। মনে করিয়ে দিয়েছেন, নভেম্বরে বাঁকুড়ার জনসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই একই ধরনের কথা বলেছিলেন। সুখেন্দুর কথায়, ‘‘অমিত শাহের ওই বক্তব্যের পরে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান তীব্র প্রতিবাদ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, একাত্তরের পরে এক জনও বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেননি। আর্থিক প্রগতির কথা তুলে তাঁর দাবি ছিল, ‘‘আজকের বাংলাদেশবাসীর কাজের খোঁজে ভারতে যাওয়ার প্রয়োজন আর হয় না।’’
মোদীর সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে শনিবার। সেখানে তিস্তা নিয়ে কোনও অগ্রিম প্রতিশ্রুতি মোদী দেবেন কি না, তা নিয়ে সতর্ক তৃণমূল। এর আগে তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এখনও পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল-সরকার রয়েছে। ফলে তাদের সঙ্গে কথা না-বলে কোনও প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশকে দেওয়া হলে যে তা মানা হবে না, সে কথা ফের বলেছেন সুখেন্দু।
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘‘তিস্তা অবশ্যই ভারত ও বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা চলবে। যত দ্রুত এই চুক্তি রূপায়ণে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
সুখেন্দুর মতে, ফরাক্কা চুক্তির ফলে বাংলার ৫২টি পুরসভা এলাকা জলের অভাবে ভুগছে। তিস্তা চুক্তির বিজ্ঞানসম্মত রূপায়ণ না-হলেও উত্তরবঙ্গের ৪টি জেলা শুকিয়ে যাবে। নদী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে ভুটান এবং উত্তরবঙ্গের কয়েকটি নদীর সঙ্গে তিস্তার সংযোগ ঘটিয়ে স্রোত বাড়ানোর পরে তবেই জল বণ্টনের কথা ভাবা উচিত বলে তাঁর দাবি।