—ফাইল চিত্র।
তাঁর উপরে কোনও চাপ নেই বলে দাবি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জ়াফর ফারুকির। কিন্তু অযোধ্যার রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ জমি বিবাদের মামলায় সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড আচমকাই জমির দাবি ছাড়তে চেয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, সিবিআই তদন্তের আশঙ্কাতেই কি ফারুকির ভোলবদল!
গত সপ্তাহেই প্রধান বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে অযোধ্যা মামলার ৪০ দিনের শুনানি শেষ হয়েছে। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ছিল বিতর্কিত জমির অন্যতম দাবিদার। সেই শুনানির একেবারে শেষ দিনে খবর ছড়িয়ে পড়ে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড জমির দাবি থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি।
সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারী প্যানেল আদালতকে জানিয়েছে, সরকার বিতর্কিত জমি অধিগ্রহণ করে নিলে ওয়াকফ বোর্ডের কোনও আপত্তি নেই।
গত মার্চ ও অগস্টে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ওয়াকফ সম্পত্তির বেআইনি কেনাবেচা সংক্রান্ত দু’টি মামলা দায়ের করেছে। দু’টিতেই জ়াফরের নাম রয়েছে। সম্প্রতি যোগী আদিত্যনাথ সরকার ওয়াকফ সম্পত্তির দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছে। সিবিআই তদন্ত শুরু হলে জ়াফরের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়াও শুরু হতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে, সিবিআই তদন্তের ভয়েই কি অযোধ্যার জমির বিবাদ থেকে সরে আসতে চাইছেন সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান? ফারুকির দাবি, ‘‘এর সঙ্গে ওই মামলার কোনও সম্পর্ক নেই। মামলা দায়ের হয়েছে মার্চ, অগস্টে। তার পরেও মধ্যস্থতা হয়েছে।’’
সাতটি মুসলিম পক্ষের মধ্যে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বাদে বাকি ছয় পক্ষেরই দাবি, জমির অধিকার ছাড়ার প্রশ্ন নেই। ওয়াকফ বোর্ডের কেউ তাঁদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেননি। মুসলিম পক্ষগুলি সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, আদালত যেন সাংবিধানিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষের কথা ভেবে রায় দেয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কী ভাবে এই রায়কে দেখবে, তা-ও যেন মাথায় রাখা হয়।
ওয়াকফ বোর্ডের অন্য সদস্যদেরও দাবি, বোর্ডের চেয়ারম্যান জ়াফর ফারুকি তাঁদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেননি। বেশ কিছুদিন উধাও থাকার পরে লখনউতে ফের উদয় হয়েছেন ফারুকি। তাঁর দাবি, ‘‘মধ্যস্থতাকারীদের কাছে কী প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা গোপন বিষয়। তবে যে প্রস্তাবই দেওয়া হয়েছে, তা মুসলিম সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত হয়েছে।’’
এ নিয়ে ওয়াকফ বোর্ডের অন্দরেই যে বিবাদ চলছে, তা আইনজীবীদের মাধ্যমেই প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড তথা মুসলিম পক্ষের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করা রাজীব ধবন অযোধ্যার বিতর্কিত জমির উপর অধিকারের দাবিতে অনড়। কিন্তু আর এক আইনজীবী শাহিদ রিজভির দাবি, অযোধ্যা বিবাদ নিয়ে সমঝোতায় হয়ে গিয়েছে। তাই এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আর রায় দেওয়ারই দরকার নেই।