প্রতীকী ছবি।
বাজারে কার্যকরী করোনা ভ্যাকসিন এলেই তা সুষ্ঠু ভাবে বণ্টনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রূপরেখা তৈরি করে রেখেছে বলে গত মাসেই জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ১৩৫ কোটি মানুষের দেশে ওই বিপুল পরিমাণ প্রতিষেধকের আমদানি ও বণ্টনের জন্য সরকারের ভাঁড়ারে পর্যাপ্ত টাকা আছে তো? শনিবার কেন্দ্রের দিকে এমনই প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দিলেন সিরাম ইনস্টিটিউটের কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা।
এ দিন টুইট করে তিনি বলেন, ‘‘আগামী এক বছরের জন্য ভারত সরকারের পুঁজিতে ৮০ হাজার কোটি টাকা আছে তো? কারণ দেশের সব মানুষের জন্য টিকা আমদানি এবং বণ্টনে ওই পরিমাণ টাকা লাগতে পারে। এটাই আমাদের সামনে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রশ্নটা তুললাম, কারণ দেশ ও বিদেশের যে সংস্থাগুলি ভ্যাকসিনের জোগান দেবে, উৎপাদন ও বণ্টন নিয়ে তাদের সঙ্গে পরিকল্পনা করা দরকার।’’
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ নামে সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিনটি দেশে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে ট্রায়াল চালাচ্ছে সিরাম ইনস্টিটিউট। জুলাইয়ে পুনাওয়ালা বলেছিলেন, বাজারে ভ্যাকসিন এলে তার প্রতিটির জন্য খরচ পড়বে হাজার টাকার মতো। তাঁর সংস্থা যে প্রতি মাসে ৩ কোটি প্রতিষেধক উৎপাদনে প্রস্তুত, সে কথাও জানিয়েছিলেন।
দেশে আক্রান্ত
সূত্র: ওয়ার্ল্ডোমিটার্স
৫৯,৯০,৫১৩
শনিবারের করোনা বুলেটিন।
সূত্র: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক
৫৯,০৩,৯৩২
মৃত ৯৩,৩৭৯
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৮৫,৩৬২
অ্যাক্টিভ রোগী ৯,৬০,৯৬৯
২৪ ঘণ্টায় মৃত ১০৮৯
২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ৯৩,৪২০
মোট সুস্থ ৪৮,৪৯,৫৮৪
তবে সম্প্রতি একটি প্রথম সারির মার্কিন দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, গণটিকাকরণ নিয়ে ভারতের অভিজ্ঞতা কম। এ দেশে ভ্যাকসিন মজুত ও বণ্টন পরিকাঠামো নিয়েও যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে। তার পরেই পুনাওয়ালার এই মন্তব্য।
ভ্যাকসিন নিয়ে আজ কোনও উচ্চবাচ্য না-করলেও দেশে সুস্থতার হার নিয়ে আশাবাদী সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের তুলনায় সুস্থের সংখ্যা বেড়েছে। শনিবার, এক দিনে সুস্থ হয়েছেন ৯৩,৪২০ জন। আক্রান্ত ৮৫,৩৬২ জন। মোট সুস্থের সংখ্যা এখন ৪৮,৪৯,৫৮৪। ফলে সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২.১৪ শতাংশ। এক দিনে সুস্থতার মাপকাঠিতে ভারত এখনও বিশ্বে শীর্ষে বলেই জানিয়েছে মন্ত্রক। তবে এক দিনে মৃত্যু আজও হাজারের উপরে ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১০৮৯ জনের। দেশে এখন মোট মৃতের সংখ্যা ৯৩,৩৭৯।
অন্য দিকে রাজ্যে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় ভুগছে মহারাষ্ট্রের সরকার। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। দেশে এখন চতুর্থ পর্যায়ে আনলক চলছে। মানুষ বাইরে বেরোচ্ছেন। এঁদের মধ্যে অনেকে আক্রান্ত এবং উপসর্গহীন। সকলে স্বাস্থ্যবিধি না-মানায় সংক্রমণ হুড়মুড় করে বাড়ছে। এই প্রবণতা ঠেকাতে প্রশাসনিক কর্তাদের রাজ্য জুড়ে কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।