অম্বাসমুদ্রমের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বলবীর সিংহ নামে ওই এএসপিকে রিজার্ভে পাঠিয়েছেন পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল সি শৈলেন্দ্র বাবু। ছবি: প্রতীকী
আবারও পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ভয়ঙ্কর অত্যাচারের অভিযোগ উঠল তামিলনাড়ুতে। অভিযোগ, হেফাজতে নিয়ে জেরার করার সময় অভিযুক্তদের দাঁত উপড়ে নিয়েছেন অ্যাসিসট্যান্ট পুলিশ সুপার (এএসপি)। এখানেই শেষ নয়, দু’জনের অণ্ডকোষ তিনি পিষে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। অম্বাসমুদ্রমের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বলবীর সিংহ নামে ওই এএসপিকে রিজার্ভে পাঠিয়েছেন পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল সি শৈলেন্দ্র বাবু।
অভিযোগ, অম্বাসমুদ্রম, কাল্লিদাইকুরিচি, বিক্রমাসিংহপুরম থানায় ধরে আনা অভিযুক্তদের উপর অত্যাচার করতেন বলবীর। ১০ জনেরও বেশি অভিযুক্তের দাঁত উপড়ে নিয়েছেন তিনি। দু’জনের অণ্ডকোষ পিষে দিয়েছেন। পুলিশের সুপারিশে তিরুনেলভেলির কালেক্টর কেপি কার্তিকেয়ন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তথা সাব-কালেক্টর মহম্মদ সাবিল আলমের নেতৃত্বে তদন্ত হবে।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, কাল্লিদাইকুরিচি থানায় যাঁরা জেরার সময় নিগৃহীত হয়েছেন, তাঁদের ডাকা হবে। ওই সময় থানায় উপস্থিত পুলিশকর্মীদেরও সমন পাঠানো হবে। ওই থানার সিসিটিভি ফুটেজ, নথি এবং নিগৃহীতদের বিরুদ্ধে যে এফআইআর হয়েছে, তাও চেয়ে পাঠিয়েছেন সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট আলম।
অভিযোগ, চেল্লাপ্পা নামে এক ব্যক্তি হেফাজতে নির্যাতিত হয়েছিলেন বলবীরের হাতে। তিনি ঘটনার একটি ভিডিয়ো তুলে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেন। সেটি প্রকাশ্যে আসার পরেই বিতর্ক শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর সঙ্গে কথা বলবে তদন্তকারী দল।
ইতিমধ্যে একটি সংবাদ মাধ্যম আর এক নির্যাতিত ভেথা নারায়ণনের সঙ্গে কথা বলেছে। ওই সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, জেরার সময় তাঁর দাঁত উপড়ে নিয়েছিলেন বলবীর। প্লাস দিয়ে তাঁর কান মুচড়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন থানায়। তার পরেই গত বৃহস্পতিবার আমায় বিক্রমসিংহপুরম থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সাব ইনস্পেক্টর রবি এবং এক জন পুলিশ কর্মী আমায় আটক করে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এএসপি আসছেন। তিনি আসতেই আমায় উপরের একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। ঘরে এএসপি-সহ ছয় পুলিশ কর্মী ছিলেন। আমার দাঁত উপড়ে, কান জখম করার পাশাপাশি লাথিও মারেন বলবীর।’’ নারায়ণের দাবি, তিনি বার বার বলবীরকে জানিয়েছিলেন, দাম্পত্য কলহের কারণেই তাঁকে থানায় ডেকে আনা হয়েছিল। তাঁর স্নায়ুর সমস্যা রয়েছে। তাতেও দমেননি বলবীর।
২০২০ সালের জুন মাসে জেরার জন্য মোবাইল বিক্রেতা পি জয়রাজ এবং তাঁর ছেলে জে বেনিকসকে আটক করে নিয়ে যায় সাথানকুলাম পুলিশ। অভিযোগ, হেফাজতে অত্যাচারের জেরে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তামিলনাড়ু পুলিশের দিকে আঙুল ওঠে। এ বার ফের সেই ঘটনারই অভিযোগ।