(বাঁ দিকে) অগ্নিকাণ্ডের পর আইএনএস ব্রহ্মপুত্র। মৃত সীতেন্দ্র সিংহ (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
আইএনএস ব্রহ্মপুত্রের অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ওই রণতরীর লিডিং সিম্যান সীতেন্দ্র সিংহ। বুধবার রাত্রে তাঁর দেহ পাওয়া যায়। ডুবুরি নামিয়ে দীর্ঘ সময় সন্ধানের পর তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় মুম্বই ডক ইয়ার্ডে ভারতীয় নৌসেনার গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ফ্রিগেট গোত্রের যুদ্ধজাহাজ আইএনএস ব্রহ্মপুত্রে আগুন লেগে যায়। তার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না আইএনএসের এক নাবিকের। নৌসেনার তরফে সোমবার জানানো হয়, ঘটনার সময়ে মুম্বই ডক ইয়ার্ডে ‘মাল্টিরোল ফ্রিগেট’ আইএনএস ব্রহ্মপুত্রের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির কাজ চলছিল। সে সময়ই হঠাৎ যুদ্ধজাহাজটিতে আগুন লেগে যায়। এখনও পর্যন্ত মনে করা হচ্ছে শর্ট সার্কিটের কারণেই এই আগুন।
এর মধ্যে মঙ্গলবার নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠী নৌ ডক ইয়ার্ড পরিদর্শনে আসেন এবং দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ ও ঘটনাক্রম পর্যালোচনা করে দেখেন। নৌবাহিনী জানিয়েছে, অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী আইএনএস ব্রহ্মপুত্রকে পুনরায় সমুদ্র-উপযোগী করে তোলার এবং জাহাজের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার নৌসেনার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠী এবং ভারতীয় নৌসেনার সমস্ত কর্মী মৃত সীতেন্দ্র সিংহের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছেন। এই কঠিন মুহূর্তে নৌবাহিনী ওই শোকাহত পরিবারের পাশে আছে।’’
আইএনএস ব্রহ্মপুত্র দেশীয় ‘ব্রহ্মপুত্র’ ক্লাস-গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেটগুলির মধ্যে প্রথম। ২০০০ সালের এপ্রিল মাসে এই রণতরীকে ভারতীয় নৌবাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছিল। ৩,৬০০ টন ওজনের জাহাজটিতে সারফেস-টু-সারফেস মিসাইল, সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল, মাঝারি পাল্লার বন্দুক, রাডার, সোনার ইত্যাদি বিভিন্ন অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে। এই রণতরীর দৈর্ঘ্য ১২৫ মিটার, সর্বোচ্চ গতিবেগ ৩০ নট।
প্রসঙ্গত, চলতি দশকে নৌসেনার একাধিক যুদ্ধজাহাজ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঠিক দু’বছর আগে, ২০২২ সালের ২১ জুলাই ভারতীয় নৌসেনার বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্যে অগ্নিকাণ্ডে এক নৌসেনা অফিসারের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগে ২০১৯ সালের এপ্রিলে কারওয়ার বন্দরে ঢোকার মুখে অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছিল আইএনএস বিক্রমাদিত্য। সেই ঘটনাতে মৃত্যু হয়েছিল নৌসেনার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ডিএস চৌহানের।