ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল (আইএনএলডি)-এর হরিয়ানার সভাপতি নফে সিংহ রাঠী। ছবি: সংগৃহীত।
হরিয়ানার বিরোধী দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল (আইএনএলডি)-এর সভাপতি নফে সিংহ রাঠীর খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। বিরোধীদের রোষের মুখে পড়েছে হরিয়ানার বিজেপি সরকার। এই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ এ বার চার জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে বলে খবর। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। নফের ছেলে দাবি করেছেন, ‘‘যত ক্ষণ না এফআইআর-এ উল্লেখিত অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করছে এবং আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত বাবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করব না।’’ আইএনএলডি-র এক নেতা দাবি করেছেন, রবিবার রাতে নফের গাড়ি লক্ষ্য করে ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে হরিয়ানাতে বিরোধী দলের নেতার খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অস্বস্তিতে পড়েছে মনোহর লাল খট্টর সরকার। বিরোধীরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুর চড়িয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। আইএনএলডি নেতা অভয় সিংহ চৌটালা দাবি করেন, ‘‘নফে দু’বারের বিধায়ক। আমাদের দলের রাজ্য শাখার প্রধান। লিখিত ভাবে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তা, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বার বার তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি।’’
সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, পুলিশ নরেশ কৌশিক, রমেশ রাঠি, সতীশ রাঠি এবং রাহুল— এই চার জন সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ জানান যে, তিনি এই ঘটনা সম্পর্কে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকে। সেই সঙ্গে ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’ গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। যদিও বিরোধীরা এই খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।
নফে রবিবার একটি চার চাকা গাড়ি করে হরিয়ানার ঝাজ্জর জেলার বাহাদুরগড় এলাকায় একটি কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাওয়ার পথে খুন হন। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য এক দলীয় কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে নফের ভাড়া করা তিন জন নিরাপত্তারক্ষীর গায়েও গুলি লাগে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিন জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টিও, আইএনএলডি নেতা খুনের ঘটনায় শাসক দলকে নিশানা করেছে। আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল অভিযোগ করেছেন, বিজেপি হরিয়ানাতে আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করছে। তিনি বলেন, ‘‘গুন্ডাদের ধরতে যেখানে পুলিশ মোতায়েন করা উচিত, হরিয়ানা সরকার তা না করে সীমানায় বিক্ষোভরত কৃষকদের আটকাতে সেই শক্তি অপচয় করছে।’’ নফের খুনের ঘটনায় বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। তাঁর কথায়, ‘‘একটি রাজনৈতিক দলের সভাপতি খুনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ওই ঘটনা স্পষ্ট করে দিল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। এ রাজ্যে কেউ নিজেকে সুরক্ষিত মনে করেন না।’’
অন্য দিকে, হরিয়ানা বিজেপির মুখপাত্র জওহর যাদব বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি কারও মৃত্যু নিয়ে বিরোধীদের এ ভাবে রাজনীতি করা ঠিক নয়। অভিযুক্তদের যাতে তাড়াতাড়ি ধরা যায় এখন আমাদের সকলের উচিত সেই চেষ্টাই করা।’’