Indian Army

Indian Army: ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত শান্ত থাকলেও বেড়েছে অনুপ্রবেশ, মত নতুন সেনাপ্রধানের

বুঝিয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে প্রথাগত যুদ্ধ চালানোর প্রশ্নে নিজস্ব ক্ষমতার বিকাশের একান্ত প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমাদের দেশেই যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধাস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির উপরে জোর দিতে হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২২ ০৪:২৩
Share:

সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে।

এক বছর ধরে কার্যত শান্ত রয়েছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। সংঘর্ষবিরতির ফলে গোলাগুলি বন্ধ থাকায় সীমান্তের বাসিন্দাদের জীবন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশ কিংবা মাদক পাচার কোনওটাই কমেনি বলে আজ দাবি করলেন সদ্য নিযুক্ত সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে। তাঁর মতে, জঙ্গি অনুপ্রবেশ ও মাদক পাচার উল্টে বেড়েছে।

Advertisement

নতুন সেনাপ্রধানের কথায়, ‘‘নিয়ন্ত্রণরেখা শান্ত হলেও সন্ত্রাসে মদত কিংবা মাদক পাচার, দুইই হয়ে চলেছে পাকিস্তানের জমি থেকে।’’ অন্য দিকে লাদাখে চিনের সঙ্গে ভারতীয় সেনার যে স্থিতাবস্থা জারি রয়েছে সে প্রসঙ্গে পাণ্ডে বলেন, ‘‘লাদাখ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভারতীয় সেনা মোতায়েন রয়েছে। ভারত কোনও ভাবেই চিনের কাছে জমি খোয়াবে না। যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় সেনা।’’

গত কাল সেনাপ্রধান হিসেবে মনোজ মুকুন্দ নরবণের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন পাণ্ডে। তিনিই হলেন ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের প্রথম অফিসার যিনি সেনাপ্রধান হলেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরে আজ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মনোজ বুঝিয়ে দেন আগামী দিনে পাকিস্তান সীমান্তে অনুপ্রবেশ, জঙ্গি সমস্যার মোকাবিলা, মাদক পাচার আটকানোই সেনার মূল লক্ষ্য হতে চলেছে। সদ্য ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে পাকিস্তানেও। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই পাণ্ডে বলেন, ‘‘বছর খানেক আগে দু’দেশের সেনা সংঘর্ষবিরতির ডাক দেওয়ায় দু’দেশের সীমান্তের মানুষের জীবন আগের থেকে স্বাভাবিক হয়েছে ঠিকই। কিন্তু পাকিস্তানের দিকে সন্ত্রাস পরিকাঠামো নষ্ট হয়েছে বা সন্ত্রাসবাদী শিবিরের সংখ্যা কমেছে এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। উল্টে সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রবেশের ঘটনা বৃদ্ধির সঙ্গেই মাদক পাচারের চেষ্টা শুরু হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর ও দেশের পশ্চিম সীমান্তে থাকা রাজ্যগুলিতে।’’

Advertisement

নরবণে দায়িত্বে থাকার সময়ে লাদাখে অনুপ্রবেশ ঘটেছিল চিন সেনার। বিরোধীদের অভিযোগ, এখনও লাদাখে ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে রেখেছে চিন। তার পর থেকেই লাদাখ সীমান্তে একে অপরের চোখে-চোখ রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে চিনা ও ভারতীয় সেনা। চিনের সঙ্গে সংঘাত প্রশ্নে নতুন সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘সীমান্তে আমাদের সেনা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। একটি বিষয় স্পষ্ট যে কোনও ভাবেই স্থিতাবস্থা নষ্ট হতে দেওয়া হবে না। আমাদের জমি বিদেশি শক্তির কাছে খোয়ানোরও কোনও প্রশ্ন নেই।’’ পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমেই লাদাখ সীমান্ত সমস্যা মেটানোর উপরে জোর দিয়েছেন পাণ্ডে। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান সময়ে সমাধানের অন্যতম পথ হল আলোচনা। তবে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনাসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গেই সামরিক সরঞ্জামও মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।সেনার কার্যকারিতা ও শক্তিবৃদ্ধির প্রশ্নে যে সংস্কার চালু রয়েছে তাতে গতি আনা এবং তিন বাহিনীর মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় বাড়ানোও আমার অন্যতম লক্ষ্য হতে চলেছে।’’

বর্তমান সময়ে দ্রুত, কম সময়ে নির্ণায়ক যুদ্ধের সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করেন সামরিক বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু গত প্রায় আড়াই মাস ধরে যুদ্ধ চলছে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে। যা শিক্ষণীয় বলেই মনে করছেন পাণ্ডে। তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়া–ইউক্রেনের ওই যুদ্ধ ভারতীয় সেনাকে প্রথাগত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি সেরে রাখার শিক্ষা দিয়েছে। যা দীর্ঘকালীন যুদ্ধের জন্য সেনার শক্তিবৃদ্ধির সঙ্গেই নতুন প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি ও দেশীয় পদ্ধতিতে আত্মনির্ভর হওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে উপলব্ধি করিয়েছে। বুঝিয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে প্রথাগত যুদ্ধ চালানোর প্রশ্নে নিজস্ব ক্ষমতার বিকাশের একান্ত প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমাদের দেশেই যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধাস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির উপরে জোর দিতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement