জন্মের সময় শিশুর দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ৩০ সেন্টিমিটার। ছবি: সংগৃহীত।
দেশের সবচেয়ে ছোট আকারের শিশুর জন্ম হয়েছে পুণেতে। জন্মের সময় তার দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ৩০ সেন্টিমিটার। ২৪ সপ্তাহ মাতৃগর্ভে থাকার পর শিশুটির জন্ম হয়েছে।
পুণের এই শিশুকন্যার নাম রাখা হয়েছে শিবান্য। জন্মের পর তার ওজন আধ কিলোও পেরোয়নি। মাত্র ৪০০ গ্রাম ওজনে জন্মেছে শিবান্য। যে কোনও সুস্থ সদ্যোজাতের ওজন থাকে অন্তত আড়াই থেকে সাড়ে ৪ কিলোগ্রাম। সেখানে শিবান্যর ওজন ছিল ৫০০ গ্রামেরও কম। চিকিৎসকেরা জানান, এত কম ওজনে ২৪ সপ্তাহে জন্মানো শিশুকে বাঁচানো সহজ নয়। তবে চিকিৎসকদের চেষ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছে একরত্তি। মায়ের সঙ্গে জন্মের পর তিন মাস হাসপাতালে থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি গিয়েছে শিবান্য।
পুণের বাসিন্দা উজ্জ্বলা পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। গর্ভাবস্থায় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, তাঁর প্রসবের সময় কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। সন্তান বাঁচবে, আশাই করেননি তিনি। পুণের চিঞ্চওয়াড়ের একটি নার্সিংহোমে ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা উজ্জ্বলা ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই জন্ম হয় ছোট্ট শিবান্যের। জন্মের পরেই তাঁকে নার্সিংহোম থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
পুণের হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে ৯৪ দিন কাটায় শিবান্য। কঠিন লড়াইয়ের পর তাকে যখন হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়, শিবান্যের ওজন দাঁড়িয়েছিল ২ কেজি ১৩ গ্রাম।
২৪ সপ্তাহে এত কম ওজনে এই প্রথম কোনও শিশুকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হল। ভারতে সেই হিসাবে নজির গড়েছে শিবান্য। এর আগে ২০১৯ সালে আমদাবাদের হাসপাতালে ২২ সপ্তাহে এক শিশুর জন্ম হয়েছিল। তার ওজন ছিল ৪৯২ কিলোগ্রাম। শিবান্যের ওজন তার চেয়েও কম।
শিবান্যের মা উজ্জ্বলা বলেছেন, ‘‘মেয়েটিকে যখন আমি প্রথম দেখেছিলাম, ওর চোখ বড় বড় করে খোলা ছিল। চোখ দেখেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম, ও বাঁচবে। জীবনের লড়াইয়ে জিতে যাবে। তা-ই হয়েছে।’’
উজ্জ্বলা জানিয়েছেন, শিশুকন্যার জন্য হাসপাতালে ২১ লক্ষ টাকা তাঁদের খরচ হয়েছে। তবে মেয়েকে বাঁচাতে পেরেছেন, টাকার জন্য কোনও আক্ষেপ নেই বলে জানিয়েছেন মা।