২০১৯ সালে এ দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে গিয়েছেন অন্তত ৭ হাজার কোটিপতি ভারতীয়। এই প্রবণতা ক্রমশই বাড়ছে বলে দাবি। প্রতীকী ছবি।
বিশ্বজোড়া পর্যটনে অতিমারি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলেও এ দেশের ধনকুবেরদের একাংশ সে সময় বিদেশ পাড়ি জমাতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হয়েছেন। দীর্ঘকালের জন্য বিদেশের মাটিতে ঘাঁটি গাড়তে ওই ধনকুবেরদের কেউ কেউ বিনিয়োগের পথ নিয়েছেন। কেউ বা আবার সরাসরি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে ভারতীয়রাই শীর্ষে রয়েছেন।
বিদেশের মাটিতে পাড়ি দিতে বিশ্ব জুড়ে যে সমস্ত আবেদনপত্র জমা পড়েছে অথবা তা নিয়ে খোঁজখবর করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত একটি তালিকা তৈরি করেছে হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স নামে একটি সংস্থা। মূলত বিদেশে বসবাস এবং অন্য রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নেওয়ার পরিকল্পনা বিষয়ক অনুসন্ধানকারী ওই সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে ভারতের ধনীবর্গই বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি ভাবে বিদেশে বসবাসের জন্য খোঁজখবর করেছেন সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া, অন্য দেশের নাগরিক হওয়ার জন্যও আগ্রহ দেখিয়েছেন তাঁরা। হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০-তে সব নজির ছাপিয়ে গিয়েছেন ভারতীয়রা। অন্য দিকে, কোভিডগ্রস্ত আমেরিকায় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ‘অস্থিরতা’-র কারণে সে দেশের বাসিন্দারাও ভারতীয়দের মতোই দেশ ছাড়তে আগ্রহী হয়েছেন। ওই সংস্থার তালিকায় ষষ্ঠ থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে আমেরিকা। এই তালিকায় এর পর তৃতীয় থেকে পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নাইজিরিয়া।
২০১৯-এ এ দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে গিয়েছেন অন্তত ৭ হাজার কোটিপতি ভারতীয়। এ তথ্য দিয়েছে ‘নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েল্থ’ নামে আর একটি সংস্থা। পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, এই প্রবণতা ক্রমশই বাড়ছে। হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯-এর তুলনায় গত বছর ভারতীয়দের মধ্যে বিদেশে দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য অনুসন্ধানের মাত্রা বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। একটি সর্বভারতীয় দৈনিকে ওই সংস্থার ডিরেক্টর তথা গ্লোবাল সাউথ এশিয়ান টিমের প্রধান নির্ভয় হান্ডা বলেন, ‘‘২০২০ সালের তুলনায় ’১৯-এ ভারতীয়দের মধ্যে বিদেশি পাড়ি দেওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধান বেড়েছে ৬৩.২ শতাংশ। ওই বছর দেড় হাজারেরও বেশি অনুসন্ধান করা হয়েছে।’’
সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে কানাডা, পর্তুগাল এবং অস্ট্রিয়ায় বিনিয়োগের জন্য বসবাসের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি খোঁজখবর এসেছে। অন্য দিকে, অস্ট্রিয়া, মাল্টা এবং তুরস্কের নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখানো হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘকালের জন্য বসবাসে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ রয়েছে পর্তুগালকে ঘিরে।