৪২ ঘণ্টা ১৩ মিনিটের পথ পেরতে লাগল প্রায় ৪ বছর!
অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর পর্যন্ত। দূরত্ব ১ হাজার ৩২৬ কিলোমিটার।
ভারতীয় রেল ছাড়া এই গৌরব আর কার হতে পারে! আর সেই ‘কৃতিত্ব’-এর দাবিদার একটি মালগাড়ি।
মালগাড়ির একটি ওয়াগনে ১ হাজার ৩১৬ ব্যাগ ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার চাপানো হয়েছিল বিশাখাপত্তনম স্টেশনে, চার বছর আগে ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর। দু’দিনের মধ্যেই তা পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল উত্তরপ্রদেশের বস্তি স্টেশনে। পৌঁছয়নি। কারও খেয়াল ছিল না বলে কেউ খোঁজখবরও নেননি।
রেলকর্তাদের চমকে দিয়ে সেই প্রায় দেড় হাজার ব্যাগ সার নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বস্তি স্টেশনে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ পৌঁছয় একটি মালগাড়ি। নথিপত্র দেখে, রেকর্ড ঘেঁটেঘুটে তো চক্ষু চড়কগাছ রেলকর্তাদের। ওই প্রায় দেড় হাজার ব্যাগ সার তো বিশাখাপত্তনম স্টেশনে মালগাড়িতে চাপানো হয়েছিল ২০১৪-র ১০ নভেম্বর!
আরও পড়ুন- লেট লতিফ রেল! ৩০ শতাংশ ট্রেন চলে দেরি করে
আরও পড়ুন- সারমেয় বাঁচাতে ট্রেন থামালেন চালক!
উত্তর-পূর্বাঞ্চল রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার সঞ্জয় যাদব বলেছেন, ‘‘চলতে চলতে কোনও মালগাড়ির কোনও ওয়াগন বা বগি কোথাও বিকল হয়ে পড়লে সেটাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় রেল-ইয়ার্ডে। এ ক্ষেত্রেও মনে হচ্ছে, তেমনটাই ঘটেছিল।’’
রেকর্ড ঘেঁটে রেলকর্তারা দেখেছেন, প্রাপকের নাম উত্তরপ্রদেশের বস্তির এক ব্যবসায়ী রামচন্দ্র গুপ্তা। তাঁর নামে বিশাখাপত্তনম স্টেশনে ১ হাজার ৩১৬ ব্যাগ সার মালগাড়ির একটি ওয়াগনে চাপিয়েছিল ইন্ডিয়ান পটাশ লিমিটেড।
প্রাপক কেন এত দিন কোনও খোঁজখবর নেননি রেল-কর্তৃপক্ষের কাছে?
প্রাপক রামচন্দ্র গুপ্তা বলেছেন, ‘‘ওটা কোম্পানির মাল ছিল। আমার হাতে পৌঁছলে টাকা দিতাম। পৌঁছয়নি, তাই টাকাও দিইনি। আর খোঁজখবরও নিইনি।’’
১৪ লক্ষ টাকা মূল্যের ওই সার যারা ওয়াগনে চাপিয়েছিল, সেই ইন্ডিয়ান পটাশ লিমিটেডও এত দিন কোনও খোঁজখবর নেয়নি রেল-কর্তৃপক্ষের কাছে। কেন?
সংস্থার গোরক্ষপুর শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট মার্কেটিং ম্যানেজার ডি কে সাক্সেনার কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম, ওই মাল হাপিস হয়ে গিয়েছে।’’