—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অতীতে রেল আর্থিক ক্ষতির মধ্যে দিয়ে চললেও এখন রেলে পরিবর্তনের হাওয়া বলে আজ দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ ৪১ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ৫৫৪টি রেলওয়ে স্টেশনের পুর্নবিকাশ ও ১৫০০টি রোড ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাসের শিলান্যাসের মঞ্চ থেকে ওই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ওই দাবি করলেও রেলেরই বাজেট নথি বলছে, গত বারের চেয়ে রেলের আর্থিক ছবি আরও খারাপ হয়েছে। বেড়েছে আর্থিক ক্ষতি। চলতি আর্থিক বছরে রেলের অপারেটিং রেশিও দাঁড়িয়েছে ৯৮.৬৫%. যার অর্থ একশো টাকা আয় করতে রেলকে খরচ করতে হচ্ছে প্রায় ৯৮.৬৫ টাকা। কার্যত যা আয় হচ্ছে, তা খরচ মেটাতেই চলে যাচ্ছে। পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য বাস্তবে খুব সামান্য অর্থই খাতায়-কলমে পাচ্ছে রেলের প্রকল্পগুলি। ফলে দীর্ঘ হচ্ছে প্রকল্প শেষ করার মেয়াদ।
আজ প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, ২০০৪ সালে যেখানে রেলের বাজেট ছিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা, তা বর্তমানে প্রায় পাঁচ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই লক্ষ কোটি টাকা। যদিও বিরোধীদের দাবি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মূল বাজেটের আর্থিক আয়তন বৃদ্ধি পায়। তাই পাল্লা দিয়ে রেলের বাজেটও বৃদ্ধি পেয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের মতে, রেলের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ায় নতুন লাইন পাতা থেকে বৈদ্যুতিকরণ সব কাজই কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ছুটছে বন্দে ভারতের মতো আধুনিক ট্রেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিসংখ্যান বলছে, রেলের সার্বিক আয়ের চিত্র আগের চেয়ে দুর্বল হয়েছে। যাত্রী ভাড়ায় বিশেষ করে স্লিপার ক্লাসের যাত্রীদের ক্ষেত্রে ভাড়া না বাড়ানোয় ওই খাতে গত বছরেও রেলকে প্রায় ষাট হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। অতীতের ইউপিএ সরকারের মতোই এই সরকারে স্লিপার ক্লাসের যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর মতো সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নিতে পারার সাহস দেখাতে না পারায় চলতি অর্থবর্ষে প্রতিটি টিকিটে গড়ে ৫৫ শতাংশ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে রেলকে। তার ফলে ট্রেন বাড়ার ফলে যেমন যাত্রী বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে যাত্রী ভাড়ায় ভর্তুকি। যার ফলে আখেরে ক্ষতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
রেলের আয়ের অন্যতম উৎস হল পণ্য পরিষেবা। সেই খাতেও লক্ষ্য ছুঁতে ব্যর্থ রেল। চলতি আর্থিক বছরে লক্ষ্য থেকে প্রায় ১০,৫০০ কোটি টাকা কম আয় করেছে রেল। তবে পেনশন খাতে গত বছরের চেয়ে চলতি আর্থিক বছরে প্রায় আট হাজার কোটি বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে রেল। কিন্তু তাতেও রেলের নিট রাজস্ব হয়েছে মাত্র দু’হাজার কোটি টাকা। যা গত আর্থিক বছরের চেয়ে প্রায় ২১০ কোটি টাকা কম।