দেশে সড়ক এবং অন্যান্য মাধ্যমে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে মূল্যের উপরে অন্তত আরও ১৪ শতাংশ পর্যন্ত খরচ হয়। প্রতীকী ছবি।
করোনাকালে যাত্রী চলাচলে ভাটার সময় থেকে আয় বাড়াতে পণ্য বহনে বিশেষ নজর দিয়ে আসছে রেল। এখন তাদের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সমস্ত পণ্য পরিবহণের বাজারের অন্তত ৪৫ শতাংশ নিজেদের দখলে আনা। তার জন্য যা যা করা দরকার, সেই রেললাইন সম্প্রসারণ, লাইনের ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা মিলিয়ে প্রায় ৮৪ হাজার নতুন ওয়াগনের বরাত দেওয়া হয়েছে বলে রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর।
দেশে সড়ক এবং অন্যান্য মাধ্যমে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে মূল্যের উপরে অন্তত আরও ১৪ শতাংশ পর্যন্ত খরচ হয়। অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে ওই খরচ ছয় শতাংশের নীচে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্র। পাশাপাশি রেলের নিজস্ব আয় বাড়াতেও পণ্য পরিবহণের পরিধি বাড়ানো জরুরি। স্বাধীনতার সময় দেশের মোট অভ্যন্তরীণ পণ্যের ৮৫ শতাংশ রেলপথে পরিবাহিত হলেও পরে তা কমতে কমতে এক দশক আগে ১৫ শতাংশে এসে ঠেকে। গত কয়েক বছরে এই নিয়ে তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ২২-২৫ শতাংশ পণ্য বাহিত হচ্ছে রেলের মাধ্যমে। যদিও তার বড় অংশই কয়লা, আকরিক লোহা, সিমেন্ট, রাসায়নিক সারের মতো হাতে গোনা কয়েকটি পণ্য। চিরাচরিত ওই পণ্যের পাশাপাশি গাড়ি, মোটরবাইক, ফল, দুধ, আনাজ, ওষুধ, জামাকাপড়, ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রীর মতো সড়কপথে বাহিত পণ্যের দিকে হাত বাড়াচ্ছে রেল।
রেলের খবর, পণ্য পরিবহণে সময়মতো ওয়াগন পেতে ৮৪ হাজার ওয়াগনের বরাত দেওয়া হয়েছে। ভারী পণ্য পরিবহণে বিভিন্ন রেলপথের সামর্থ্য বাড়াতে লাইনের অ্যাক্সেল লোড ২২.৫ টন থেকে বাড়িয়ে ২৫ টন করা হয়েছে।
পণ্যবাহী করিডরে একই ওয়াগনের উপরে-নীচে দু’সারি কন্টেনার বহন করতে ওভারহেড কেব্লের উচ্চতা বাড়ানোর পাশাপাশি ছোট বগির নিচু ওয়াগনও তৈরি করা হচ্ছে। দুর্গম রাস্তায় পণ্যবাহী ট্রাক বহনের উপযোগী ওয়াগনও তৈরি হচ্ছে বলে রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর। রেল প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদৌস সম্প্রতি একটি বণিকসভার অনুষ্ঠানে জানান, বিপুল সংখ্যক ওয়াগনের বরাত দেওয়ার পাশাপাশি সারা দেশে এখন দৈনিক গড়ে ১২ কিলোমিটার রেলপথ তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরের মার্চের মধ্যে ১৫০০ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহণের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।