কালকা মেল। ফাইল ছবি।
ঐতিহ্যবাহী হাওড়া-কালকা মেলের নাম ‘নেতাজি এক্সপ্রেস’ করল ভারতীয় রেল। নেতাজির সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবস নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। সেই আবহে আগামী ২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মদিনের প্রাক্কালেই রেলের এই ঘোষণা। ১৯৪১ সালে কলকাতার বাড়ি থেকে ব্রিটিশের নজরবন্দি এড়িয়ে পালানোর সময় তৎকালীন বিহারের গোমো থেকে কালকা মেল ধরেছিলেন নেতাজি। গোমো স্টেশনটি বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে।
বুধবার কালকা মেলের এই নামকরণের কথা টুইট করেছেন রেলমন্ত্রী পীযূশ গয়াল। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘১২৩১১/১২৩১২ হাওড়া-কালকা এক্সপ্রেসের নামকরণ নেতাজি এক্সপ্রেস করা হল। এই ঘোষণা করতে পেরে খুশি ভারতীয় রেল।’ নেতাজির ‘পরাক্রম’ ভারতকে স্বাধীনতা এবং উন্নতির এক্সপ্রেসে বসিয়েছিল বলেও টুইটে লিখেছেন তিনি। ‘নেতাজি এক্সপ্রেস’-এর সূচনার মধ্য দিয়ে এই বীরের জন্মদিন পালন করার সুযোগ পাওয়ায় নিজের উচ্ছ্বাস গোপন করেননি রেলমন্ত্রী। মঙ্গলবার রেলবোর্ডের তরফে রেলের সমস্ত বিভাগের জেনারেল ম্যানেজারদের এই তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়েছে, গত ১৪ জানুয়ারি, হাওড়া-কালকা মেলের নাম বদলের প্রস্তাব আসে রেলমন্ত্রকের কাছে। সেই প্রস্তাব মেনেই এই সিদ্ধান্ত।
স্বাধীনতার আগের সময়ে কর্মাসিয়াল ট্রেনগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কালকা মেল। কলকাতার সঙ্গে কালকার যোগসূত্র ছিল এই ট্রেন।
মঙ্গলবার সকালেই বিজ্ঞাপ্তি জারি করে কেন্দ্র ঘোষণা করে নেতাজির জন্মদিবসকে প্রতি বছর ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। কিন্তু রাজ্য যে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে খুশি নয়, মঙ্গলবার পুরুলিয়া থেকে সে বার্তা স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুরুলিয়ার হাটমুড়ায় গিয়ে নেতাজির জন্মদিবস নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন মমতা। তাঁর মতে, রাজ্য মনে করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এক জন দেশপ্রেমী, দেশনায়ক। তাই তাঁর জন্মদিবসকে ‘দেশনায়ক’ হিসেবে ঘোষণা করা উচিত ছিল কেন্দ্রের। মমতা বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্র কী ঘোষণা করেছে, না করেছে, সেটা তাদের এক্তিয়ার। কেন্দ্র দিনটি পালন করতে যে শব্দ ঘোষণা করেছে, আমরা খুশি নই। পরিবারের (নেতাজির) সদস্যদের অনেকেও খুশি নন বলে জেনেছি। আমি এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না, এ নিয়ে রাজনীতিও করতে চাই না।” নেতাজির জন্মদিবস নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সঙ্ঘাতের আবহেই রেলের তরফ থেকে হল কালকা মেলের নাম বদলের ঘোষণা।