Republic Day 2024

প্রজাতন্ত্রে জয়গান মেয়েদের

শুধু সেনার এই মিলিত দলে নয়, আজকের অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই উজ্জ্বল উপস্থিতি রইল মেয়েদের। জাতীয় পতাকা উড়িয়ে কুচকাওয়াজের সূচনা করলেন দেশের দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:০১
Share:

(বাঁ দিকে) নয়াদিল্লির কর্তব্য পথে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীর মহিলাদের মিলিত দল। নারীশক্তির উদযাপন কলকাতার রেড রোডেও (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই এবং সুদীপ্ত ভৌমিক।

রাজধানীর কর্তব্য পথ ধরে এগিয়ে আসছেন একদল মেয়ে। ব্যান্ডের তালে তালে এক ছন্দে পড়ছে দৃপ্ত পা। ভারতীয় সেনা, বায়ুসেনা ও নৌসেনার মহিলা কর্মী-অফিসারদের নিয়ে গড়া হয়েছে দলটা। দেশের প্রজাতন্ত্র দিবসের ৭৫ বছরের ইতিহাসে নয়াদিল্লির কুচকাওয়াজে মেয়েদের এমন একটি সম্মিলত দলের অংশগ্রহণ এই প্রথম।

Advertisement

শুধু সেনার এই মিলিত দলে নয়, আজকের অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই উজ্জ্বল উপস্থিতি রইল মেয়েদের। জাতীয় পতাকা উড়িয়ে কুচকাওয়াজের সূচনা করলেন দেশের দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। শুরুতেই ‘আবাহন’। দেশের নানা প্রান্তের নানা বাদ্যযন্ত্র বাজাতে বাজাতে এলেন ১১২ জন মহিলা শিল্পী। তাঁদের ২০ জনের হাতে মহারাষ্ট্রের ঢোল-তাসা, ১৬ জন বাজাচ্ছিলেন তেলঙ্গানার দাপ্পু। ঢাক-ঢোলের বোল তুললেন পশ্চিমবঙ্গের ১৬ নারী। আর বাজছিল শাঁখ। এই নজিরবিহীন আয়োজনেই নিহিত ছিল বার্তা— আজ অর্ধেক আকাশের দিন।

তার পর এলেন বাহিনীর মেয়েরা। সবাই দেখল, রাষ্ট্রপতিকে স্যালুট করে রাজধানীর প্রাচীন রাজপথে হেঁটে যাওয়া দিল্লি পুলিশের দলটি তৈরি হয়েছে মহিলাদের নিয়েই। বিএসএফের তিন অফিসার-সহ ১৪৪ জন মহিলার যে দলটি কুচকাওয়াজ করল, তাঁদের মধ্যে ২৭ জনই পশ্চিমবঙ্গের। সেই বাহিনীর সঙ্গে থাকা যন্ত্রশিল্পীরাও মহিলা। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী, সিআইএসএফ, সিআরপি, আইটিবিপি, এসএসবি— প্রত্যেকটি দলের কুচকাওয়াজ পরিচালিত হল মেয়েদের নেতৃত্বে। তিন বাহিনীর চিকিৎসাকর্মী মহিলাদের একটি দলও এই প্রথম কুচকাওয়াজ করল প্রজাতন্ত্র দিবসে। অংশ নিলেন মহিলা অগ্নিবীর সেনারাও।

Advertisement

আজ যন্ত্রকেও পদে পদে কথা বলালেন মেয়েরা। কখনও আধাসেনার চলন্ত মোটরবাইকে সিঁড়ি বেয়ে উঠে দাঁড়ানো। কখনও এক বাইকে পাঁচ-সাত জন সওয়ার হয়ে কসরত— তখনও তাঁদের হাতে ল্যাপটপ কি বাইনোকুলার। দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও দেখাল তাদের উদ্ভাবিত নানা গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র আর প্রযুক্তির ঝলক। তাদের ট্যাবলোর থিমই ছিল, ‘স্থল, বায়ু, সমুদ্র, সাইবার দুনিয়া এবং মহাকাশে দেশকে রক্ষাকবচ গড়ে দিচ্ছেন মেয়েরা’। ডিআরডিও বুঝিয়ে দিল, তাদের তৈরি উপগ্রহ ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি তেজস যুদ্ধবিমান, সবেতেই রয়েছে মহিলাদের অংশগ্রহণ। আকাশ কাঁপিয়ে উড়ে গেল বায়ুসেনার একের পর এক বিমান। সেগুলির ককপিটে ছিলেন সব মিলিয়ে ১৫ জন মহিলা পাইলট।

বিভিন্ন রাজ্যের ট্যাবলোতেও ছিল নারীশক্তির উদ্‌যাপন। কর্তব্য পথ দেখল লোকটাক হ্রদের চলমান দৃশ্য। মেয়েরা পদ্ম তুলছেন হ্রদ থেকে। তাঁরাই চালাচ্ছেন আস্ত একটা বাজার। এই ট্যাবলো মণিপুরের। পরে কেউ কেউ বলছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হয়তো এক বারও মণিপুরের পরিস্থিতি দেখতে যাননি। কিন্তু ভোটের আগে নারীশক্তির মন জয়ের চেষ্টায় আজ খামতি রাখেনি তাঁর সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement