—ফাইল চিত্র।
চিনের চোখরাঙানির মোকাবিলা করতে প্যাংগংয়ে নজরদারি আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিল ভারত। তার জন্য এ বার এক ডজন অত্যাধুনিক নৌকো কেনার চুক্তি করল ভারতীয় সেনা। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই নৌকাগুলি উচ্চ গতিসম্পন্ন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এবং প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন এলাকায় চিনা বাহিনীর গতিবিধির উপর নজরদারি চালানোর জন্য সবরকমের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম থাকছে তাতে। সেগুলি হাতে এসে এলে, লাদাখে চিনা আগ্রাসন ঠেকানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী তারা।
বিগত ৮ মাস ধরে লাদাখে চিনের সঙ্গে মুখোমুখি সঙ্ঘাতে ভারত। খুব শীঘ্র যে পরিস্থিতি উন্নতির কোনও সম্ভাবনা নেই, সেনার এই চুক্তিই তার জানান দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা গোয়া শিপইয়ার্ড লিমিটেড-এর সঙ্গে ১২টি নৌকা বাবদ ৬৫ কোটি টাকার এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তার আওতায় আগামী ৪ বছর নৌকার অতিরিক্ত সরঞ্জাম এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও গোয়া শিপইয়ার্ডের। এ বছর মে মাস থেকেই তারা নৌকা সরবরাহ শুরু করবে।
সেনাসূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ঘুরতে চললেও ১৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ প্যাংগং হ্রদের উত্তর ও দক্ষিণ তীরে এখনও মুখোমুখি অবস্থান করছে দুই দেশের সেনা। দফায় দফায় আলোচনাতেও সুরাহা মেলেনি। তাই চিনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সঙ্ঘাতেরই তোড়জোড় করছে ভারত। এই মুহূর্তে প্রচণ্ড ঠান্ডায় জমে গিয়েছে প্যাংগং হ্রদ। তবে পারদ ঊর্ধ্বমূখী হলেই বরফ গলতে শুরু করবে। ড্রাগনদের সর্বক্ষণ নজরে রাখার জন্য সেইসময় সরাসরি প্যাংগং হ্রদেই নৌকাগুলি মোতায়েন করা হবে।
আরও পড়ুন: সবার জন্য নয়, বিনামূল্যে টিকাকরণ শুধুমাত্র ৩০ কোটির, জানালেন নীতি আয়োগ প্রধান
প্যাংগং সংলগ্ন এলাকায় হাঁটাপথে তো বটেই, গ্রীষ্মকালে নৌকা নিয়েও হ্রদের উপর নজরদারি চালায় দুই দেশের সেনা। প্যাংগংয়ে নজরদারি চালাতে এই মুহূর্তে লাদাখে ভারতীয় সেনার হাতে ১৭ কিউআরটি (কুইক রিয়্যাকশন টিম) নৌকা রয়েছে। ২০২১-’১৩ সাল থেকে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ৯০০ ফুট উঁচুতে মোতায়েন রয়েছে সেগুলি। তবে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির হাতে থাকা ৯২৮বি নৌকার মোকাবিলা করার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নৌকার প্রয়োজন ছিল। তাই নতুন এই এক ডজন নৌকার বরাত দিল ভারত।
আরও পড়ুন: কারা প্রথম টিকা পাবেন, কত দাম হবে, জানালেন এমস কর্তা
গত বছর মে মাসে লাদাখ সীমান্তে চিনের সঙ্গে সঙ্ঘাত চরম আকার ধারণ করে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে সেখানে হ্রদের উত্তরের ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এলাকা চিনা বাহিনী দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ। সেনাছাউনি গড়ে, রীতিমতো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে চিনা বাহিনী অবস্থান করছে বলে জানা গিয়েছে। তাদের মুখোমুখি অবস্থান করছে ভারতীয় সেনাও। দফায় দফায় আলোচনা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত সেখান থেকে সেনা সরাতে রাজি হয়নি কোনও দেশই।