বিচার চেয়ে আবেদন সেনা জওয়ান প্রভাকরণের। ছবি: সংগৃহীত।
কাশ্মীরে কর্মরত এক সেনা জওয়ানের ভিডিয়ো ঘিরে বিতর্ক। অধুনা ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় তামিলনাড়ুর বাসিন্দা ওই জওয়ান অভিযোগ করেছেন যে, তাঁর স্ত্রীকে অর্ধনগ্ন করে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগের তির তামিলনাড়ুর নাগাপাট্টিনাম জেলার কাডাভাসাল গ্রামের কয়েক জনের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি টুইটারে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এন থিয়াগারাজন নামে একটি হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়। সেই ভিডিয়োয় রয়েছেন সেনা জওয়ান হাবিলদার প্রভাকরণ। তাঁর আসল বাড়ি দক্ষিণের রাজ্যের পাদাভেদু গ্রামে। বর্তমানে কর্মসূত্রে থাকতে হয় কাশ্মীরে।
ভিডিয়োয় প্রভাকরণকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আমার স্ত্রী ভাড়ায় একটি দোকান চালান। তাঁকে ১২০ জন মিলে মারধর করেছে, দোকানের জিনিসপত্র বাইরে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা হয়েছে। আমি পুলিশ সুপার সাহেবকে অভিযোগ জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। ডিজিপি স্যার প্লিজ আমাকে সাহায্য করুন। ওরা হামলা করছে, আমার পরিবারকে চাকু দেখিয়ে ভয় পাওয়ানো হচ্ছে। আমার স্ত্রীকে অর্ধনগ্ন করে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়েছে।’’ এই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
যদিও কান্ধাভাসালের পুলিশ জওয়ানের অভিযোগকে অতিরঞ্জিত বলে দাবি করছে। পুলিশ সূত্রে দেখা গিয়েছে, বিষয়টি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে। তেমন গুরুতর কিছু হয়নি।
পুলিশ সূত্রে খবর, গোলমালের সূত্রপাত দোকানের দখলদারি ঘিরে। রেনুগাম্বাল মন্দিরের জমিতে একটি দোকান রয়েছে। জনৈক কুমারের কাছ থেকে সেই দোকানটি প্রভাকরণের শ্বশুরমশাই সেলভামূর্তি পাঁচ বছরের লিজে নিয়েছিলেন সাড়ে ৯ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। কুমারের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে রামু দোকানটি ফেরত চান। সেলভামূর্তিকে রামু জানান, এ জন্য যে অর্থ লিজবাবদ তাঁরা পেয়েছিলেন, তা ফিরিয়ে দেবেন। এ নিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি দু’তরফের মধ্যে লিখিত চুক্তিও হয়। কিন্তু রামুর অভিযোগ, সেলভামূর্তি শেষ মুহূর্তে মন বদলান এবং টাকা ফেরত নিতে অস্বীকার করেন। জানিয়ে দেন, দোকান তিনিই চালাবেন।
অভিযোগ, গত ১০ জুন যখন রামু টাকা ফিরিয়ে দিতে এই দোকানে গিয়েছিলেন তখন তাঁকে মারধর করা হয়। এর পরেই রামুর পরিচিত লোকজন এসে দোকানে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় দোকান সামলানো সেলভামূর্তির মেয়ে কীর্তি অর্থাৎ প্রভাকরণের স্ত্রীকে। রামুর দাবি, কীর্তির গায়ে হাত পড়েনি। যদিও সে দিন বিকেলেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় কীর্তিকে। দাবি করা হয়, মারধরে তিনি গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন। যদিও প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, মারধরের অভিযোগ মোটেই ঠিক নয়। কান্ধাভাসাল পুলিশ দু’তরফের বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করেছে।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই লেগে গিয়েছে রাজনীতির রং। তামিলনাড়ু বিজেপির সভাপতি কে আন্নামালাই ঘোষণা করে দিয়েছেন, তাঁর দল সব রকম ভাবে সেনা জওয়ানের পাশে রয়েছে। তিনি ফোনে সেনা জওয়ানের সঙ্গেও কথা বলেন এবং সমস্ত রকম সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।