চিনের তৎপরতার উপর কড়া নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। ফাইল চিত্র।
ফের চিনকে হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান এমএম নরবণে। বললেন, “লাদাখে প্রকৃত নিয়নন্ত্রণরেখা থেকে চিন যদি সেনা না সরায়, তা হলে ভারতও সরাবে না।” সম্প্রতি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে অরুণাচল প্রদেশ দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল ২০০ চিনা সেনা। ভারতীয় বাহিনীর বাধার মুখে পড়ে পিছু হঠে তারা। দু’পক্ষের সংঘর্ষও হয়। সরকারি সূত্রে খবর, চিনের দিকে মল্ডো পয়েন্টে রবিবারই দু’দেশ সেনা সরানো নিয়ে বৈঠকে বসবে। তার আগেই ভারতীয় সেনাপ্রধানের এই হুঁশিয়ারি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সেনা সরানো নিয়ে দফায় দফায় শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে আগে। কিন্তু তার পরেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় তৎপরতা বজায় রেখেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। শুধু তাই নয়, চিনের দিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নানা নির্মাণকাজও চালাচ্ছে তারা। যা অশনিসঙ্কেত বলেই মনে করছে ভারত। তবে নরবণে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, চিনের এই তৎপরতার উপর কড়া নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তার জবাব দেওয়ার জন্য পুরোদস্তুর প্রস্তুত ভারতীয় সেনাও।
নরবণে বলেন, “যে ভাবে পিএলএ তাদের দিকে নির্মাণকাজ চালাচ্ছে তা দেখে মনে হচ্ছে, ওরা ওখানেই স্থায়ী ভাবে থাকার বন্দোবস্ত করছে। যদি ওরা এ রকম ভাবনাচিন্তা করে, তা হলে আমরাও থেমে থাকব না। আমাদের সেনাও একই রকম ব্যবস্থা করবে।”
১৭ মাস ধরে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দু’ধারে ভারত এবং চিন দু’দেশ ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। গত ৩১ জুলাই ১২ দফার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে গোগরা থেকে সেনা সরানো নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হয়। রবিবারেই এই বৈঠকে অরুণাচল প্রদেশে চিনা সেনার ঢুকে পড়ার বিষয়টি আলোচনা হতে পারে বলে সরকারি সূত্রে খবর।
নরবণে জানিয়েছেন, এ বছরেও শীতের আগে থেকে সেনা মোতায়েন করা শুরু করেছে চিন। অনেকটা ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যে রকম পরিস্থিতি তৈরি হয় এই সময়ে, ঠিক সে রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে চিন। তবে তারা খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না বলেও দাবি ভারতীয় সেনাপ্রধানের। তাঁর আরও দাবি, চিন কোনও পদক্ষেপ করার চেষ্টা করলেই ভারতীয় সেনার বাধার মুখের পড়বে।
আফগানিস্তান পরিস্থিতি এবং কাশ্মীরের উপর তার প্রভাব নিয়েও সরব হয়েছেন নরবণে। তিনি বলেন, “২০ বছর আগে যখন আফগানিস্তানে তালিবান সরকার ছিল, সে দেশের জঙ্গিরা কাশ্মীর উপত্যকায় নেটওয়ার্ক পরিচালনা করত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে এমনটা ভাবার কারণ নেই। তবে যে কোনও রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আমরা। যে ভাবে ২০০০ সালে আফগান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছিল, এ বারও কোনও কিছু করার চেষ্টা করলে ঠিক একই রকম ভাবে জবাব দেওয়া হবে।”