গুরেজ়ের মাইন-পাতা নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনার হাতে কাগজ সই করে দেহটি তুলে দিল ভারতীয় সেনা। পিটিআই
নদীতে ভেসে পাকিস্তান থেকে উত্তর কাশ্মীরের আচুরায় চলে এসেছিল সাত বছরের আবিদ শেখের মৃতদেহ। শিশুটির দেহ তার পরিবারের হাতে তুলে দিতে মরিয়া গ্রামবাসীরা পাহাড় থেকে বরফ নিয়ে এসে সংরক্ষণ করেছিল দেহটি। ধর্মীয় প্রথা মেনে স্থানীয় মসজিদে প্রার্থনা হয় আবিদের জন্য। শেষমেশ, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া হল শিশুটির দেহ। সরকারি প্রোটকল না মেনে মাইন পাতা গুরেজ় সীমান্ত পেরিয়ে আবিদের দেহ ফিরিয়ে নিল তার দেশ।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বালটিস্তানের এক গ্রামের বাসিন্দা আবিদ গত সোমবার থেকে নিখোঁজ ছিল। স্কুলে যাওয়ার পথে বুরজ়িল নালায় পড়ে যায় সে। মঙ্গলবার কিষণগঙ্গা নদীতে তার দেহটি ভাসতে দেখেন নিয়ন্ত্রণ রেখার অদূরে আচুরার বাসিন্দারা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফেসবুক থেকে তাঁরা জানতে পারেন পাকিস্তানে ‘নিখোঁজ শিশু’ আবিদের কথা। ভিডিয়োতে দেখেন, ছেলেকে ফিরে পেতে আবিদের পরিবারের কাতর আবেদন। বান্দিপোরার ডেপুটি কমিশনার শাহবাজ় মিরজ়া বলেছেন, ‘‘আমরা বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে সেনাকে জানাই। শিশুটির দেহ ফেরানোর জন্য পাক সেনার সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলি।’’
কিন্তু আচুরায় কোনও মর্গ না থাকায় সমস্যা হয় দেহ সংরক্ষণে। পাহাড় থেকে বরফ ভেঙে এনে দেহটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন গ্রামবাসীরা। তা সত্ত্বেও দেহটি পচে যেতে পারে এই আশঙ্কায় সেটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাকিস্তানের হাতে তুলে দিতে হটলাইনে সে দেশের সেনার সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারত। ঠিক হয় বুধবারই সেটি গুরেজ় সীমান্ত পার করে পাকিস্তানে ফেরানো হবে। কিন্তু পাকিস্তান জানায়, সরকারি নিয়ম মেনেই গুরেজ়ের ২০০ কিলোমিটার দূরে কুপওয়ারা জেলার তিতওয়াল থেকে দেহটি সংগ্রহ করবে তারা।
সেই মতো বুধবার দেহ নিয়ে সীমান্তে উপস্থিত হয় সেনা। কিন্তু পাকিস্তানের দিক থেকে কেউ হাজির না হওয়ায় দেহ নিয়ে ফিরে আসা হয় গুরেজ়ে। বৃহস্পতিবার সকালে অবশ্য গুরেজ়ের মাইন পাতা সীমান্ত পেরিয়েই পাকিস্তানে যায় আবিদের দেহটি। শ্রীনগরের ১৫ কর্পসের এক কর্তার কথায়, ‘‘এ ক্ষেত্রে প্রোটোকল মানা হয়নি। মানবিকতার খাতিরে এই পদক্ষেপ।’’ আর সীমান্ত পারের দুই গ্রাম বলছে, এমনটা তারা আগে কখনও দেখেনি।