প্রতিনিধিত্ব মূলক ছবি।
লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-য় টানাপড়েনের আবহেই চিনা ফৌজের তৎপরতার খবর সামনে এসেছে। সড়ক, সেতু, বাঙ্কার, সেনাঘাঁটি বানিয়ে চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) সেখানে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এই আবহে দীর্ঘদিনের গয়ংগচ্ছ মনোভাব ছেড়ে এলএসি বরাবর জরুরি ভিত্তিতে পরিকাঠামো ও উন্নয়নকাজ শুরু করছে ভারত।
সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই দক্ষিণ লাদাখের নয়োমায় অগ্রবর্তী বিমান অবতরণ ক্ষেত্র (অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড) নির্মাণ করছে ভারত। পূর্ব লাদাখের এলএসি থেকে এই নয়োমার দূরত্ব মাত্র ৫০ কিলোমিটার। এই অবতরণ ক্ষেত্র থেকে মূলত সি-১৩০জে হারকিউলিস পরিবহণ বিমান এবং ভারী হেলিকপ্টার ‘চিনুক’ ওঠানামা করবে বলে বায়ুসেনা সূত্রের খবর। হেলিকপ্টারে করে মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায় সৈন্যদের নিয়ে যাওয়া হবে এবং তাঁদের রসদ পৌঁছে দেওয়া হবে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ভিডিয়ো কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ওই এয়ারস্ট্রিপ নির্মাণের ভিত্তপ্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, শুধু নয়োমা বিমানঘাঁটি নয়, আগামিদিনে এলএসি লাগোয়া মোট ৯০টি পরিকাঠামো প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন রাজনাথ। যার মোট বরাদ্দ প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকা।
বায়ুসেনা সূত্রের খবর, এই বিমানঘাঁটি নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন। এর আগে উত্তর-পূর্ব লাদাখের দৌলত বেগ ওল্ডি এলাকাতেও সামরিক কৌশলগত ভাবে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ অগ্রবর্তী বিমান অবতরণ ক্ষেত্র তৈরি করেছে বায়ুসেনা। গত তিন বছরে লাদাখ সীমান্তে বেশ কয়েক বার মুখোমুখি সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দুই দেশের সেনার মধ্যে। ভারতের অভিযোগ এলএসি পেরিয়ে দেপসাং, ডেমচকের মতো এলাকায় ঘাঁটি গড়েছে চিনের সেনা। সীমান্তের ওপারে যুদ্ধ পরিকাঠামো তৈরির কাজ থামায়নি চিন। লাদাখের পাশাপাশি অরুণাচল প্রদেশ এবং সিকিমে এলএসি-র ওপারে অধিকৃত তিব্বতে চিনা ফৌজের পরিকাঠামো নির্মাণের প্রমাণ মিলেছে উপগ্রহচিত্র এবং গোয়েন্দা রিপোর্টে। এই পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিরোধের প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারত।