গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সনাতন ধর্মকে অপমান করার ‘অপরাধে’ তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিনের পুত্র উদয়নিধিকে ঠাটিয়ে মারতে হবে চড়। আর তা হলেই মিলবে নগদ ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার। পড়শি রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়াতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেখা গিয়েছে এমন পোস্টার। একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রচারিত ওই পোস্টারে ‘চড় মারতে ইচ্ছুক’ ব্যক্তিদের যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়েছে। এর জেরে দাক্ষিণাত্যের রাজনীতিতে এ বার অসহিষ্ণুতার আঁচ আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, স্ট্যালিন মন্ত্রিসভার সদস্য তথা জনপ্রিয় তামিল অভিনেতা উদয়নিধি শনিবার চেন্নাইয়ে লেখকদের একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলার এই অনুষ্ঠানে আমায় আমন্ত্রণ জানানোয় আমি উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানাই।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম কাজ হল বিরোধিতা নয়, সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলা। এই সনাতন প্রথা সামাজিক ন্যায় এবং সাম্যের বিরোধী।’’ অভিযোগ, ওই অনুষ্ঠানে উদয়নিধি জানিয়েছিলেন যে, কিছু জিনিস আছে, যার বিরোধিতা যথেষ্ট নয়, তা নিশ্চিহ্ন করা দরকার। যেমন করোনা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির বিরোধিতা নয়, তাদের নিশ্চিহ্ন করা দরকার, তেমনই সনাতন আদর্শকেও মুছে ফেলা দরকার।
তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেতা কমল নাথ, কেসি বেনুগোপাল ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, উদয়নিধির ওই বক্তব্যকে তাঁরা সমর্থন করেন না। স্ট্যালিন-পুত্রও প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, কোনও ধর্মকে আঘাত করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে বিষয়টিকে রাজনৈতিক প্রচারে আনতে তৎপর বিজেপি। গোটা বিষয়টিকে হিন্দু ধর্মের উপরে আঘাত বলে অভিযোগ তুলে প্রচারে নেমেছে তারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সরাসরি ‘ইন্ডিয়া’কে হিন্দু-বিরোধী বলে দাগিয়ে দিয়েছেন। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও নাম না-করে উদয়নিধিকে নিশানা করেছেন। পাশাপাশি, উত্তরপ্রদেশ-সহ কয়েকটি রাজ্যে উদয়নিধির বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। তাঁকে গ্রেফতারির দাবিও উঠেছে। এই আবহে স্ট্যালিন-পুত্র বুধবার বলেন, ‘‘নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনে দেশের রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এটাই সনাতন ধর্মের আদর্শ।’’