কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিক থেকে)। —ফাইল চিত্র।
ভারত-কানাডা সম্পর্কের পারদ আরও চড়ল। ভারত থেকে কানাডার প্রায় ৪০ জন কূটনীতিককে সে দেশে ফেরানোর নির্দেশ দিল নয়াদিল্লি। মঙ্গলবার ‘দ্য ফাইনান্সিয়াল টাইমস’ সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে নয়াদিল্লি থেকে নিজেদের কূটনীতিককে সরাতে হবে কানাডাকে। অটোয়াকে এমন বার্তাই দিয়েছে নয়াদিল্লি। কানাডায় খলিস্তানপন্থী নেতা খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির এই নির্দেশে দু’দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হতে চলেছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ।
গত জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে খুন হন খলিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর। হরদীপের খুনের নেপথ্যে ভারত সরকারের হাত থাকতে পারে বলে সম্প্রতি সে দেশের পার্লামেন্টে মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দেয় নয়াদিল্লি। আর এই ঘটনা নিয়েই দু’দেশের মধ্যে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক চাপানউতর। ভারতে বসবাসকারী বা ঘুরতে যাওয়া কানাডার নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সংক্রান্ত কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে সে দেশের সরকার। তার পাল্টা কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় পড়ুয়া এবং নাগরিকদের চূড়ান্ত সতর্ক ভাবে থাকতে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যখন টালমাটাল, তখন আবার নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের দিকেই আঙুল তোলেন ট্রুডো। পাল্টা রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় কানাডার বিরুদ্ধে সরব হন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে জয়শঙ্কর বলেছেন, “বাধ্যবাধকতা ছিল। আমাদের কূটনীতিক, দূতাবাসের উপরে হিংসার প্রচার করা হচ্ছিল। কী ভাবে ওঁরা দফতরে গিয়ে ভিসা দেওয়ার কাজ করবেন। এটা আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন। ভিয়েনা চুক্তির প্রশ্ন। ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী আমাদের কূটনীতিক, দূতাবাসকে নিরাপত্তা দিতে হবে।’’
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন, কানাডায় ভারতের যে সংখ্যক কূটনীতিক রয়েছেন, সেই তুলনায় নয়াদিল্লিতে কানাডার কূটনীতিকদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। তাই দু’দেশের মধ্যে সমতা রাখা উচিত। আর সেই কারণেই ভারত থেকে প্রায় ৪০ জন কানাডার কূটনীতিককে সরানোর কথা বলা হয়েছে বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। দুই দেশের সম্পর্কের চাপানউতরের মাঝে নয়াদিল্লির এ হেন নির্দেশ ভিন্ন মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।