বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। — ফাইল চিত্র।
আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের সংজ্ঞা দেওয়া বা সীমা নির্ধারণ করা এক প্রকার অসম্ভব। আমেরিকায় প্রবাসী ভারতীয়দের একটি কর্মসূচিতে এই কথাই জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি এও জানালেন, এই দুই দেশ এখন পরস্পরকে ‘পছন্দসই, সর্বোত্তম, সুখকর সহযোগী’ হিসাবেই দেখে। এ প্রসঙ্গে তুলে এনেছেন চন্দ্রযানের প্রসঙ্গও।
ওয়াশিংটনে প্রবাসী ভারতীয়দের ওই কর্মসূচিতে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আমায় প্রায়ই জিজ্ঞেস করা হয় যে, এই দুই দেশ (ভারত-আমেরিকা)-এর সম্পর্ক কোথায় চলেছে? এই সম্পর্কের সীমা নির্ধারণ বা সংজ্ঞা দেওয়া বা এই নিয়ে প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করা আমার পক্ষে কঠিন। কারণ এই সম্পর্ক সব দিক থেকে সমস্ত প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গিয়েছে। সে কারণে আজ দুই দেশের সম্পর্কের সংজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করি না। আমরা এই সম্পর্কের মাত্রা ক্রমেই বাড়িয়ে চলেছি।’’
চলতি সপ্তাহে আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, প্রশাসনিক কর্তা, শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জয়শঙ্কর। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ভারত এবং আমেরিকার এক সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। আমেরিকার বিষয়ে যাঁরা ভাল বলেন এবং ভাল ভাবেন, তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাটা ওয়াশিংটনের কাছে জরুরি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা নতুন ক্ষেত্র খুঁজে চলেছি। এই কাজটা যতই এক সঙ্গে করব, ততই বেশি সফল হব।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি চন্দ্রযানের প্রসঙ্গও তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইসরোর চন্দ্রযানের মতোই ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।’’
দিন কয়েক আগে নয়াদিল্লিতে হয়েছে জি২০ সম্মেলন। সেই সম্মেলনকে সফল করে তুলতেও সাহায্য করেছে আমেরিকা। ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসে আয়োজিত একটি কর্মসূচিতে সে কথা জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি জানান, এই সম্মেলনকে সফল করে তুলতে আমেরিকা যে সাহায্য করেছে, তা সকলের সামনে বলা উচিত।
আমেরিকার বসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন জয়শঙ্কর। ট্রুডোর অভিযোগ ছিল, কানাডায় খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যার নেপথ্যে রয়েছে ভারতের এজেন্ট। এই প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর জানান, এটা ভারতের নীতি নয়। ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সংঘাতের আবহে কানাডার নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। তা নিয়েও ওয়াশিংটনে মুখ খুলেছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, “বাধ্যবাধকতা ছিল। আমাদের কূটনীতিক, দূতাবাস নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছিল। কী ভাবে ওঁরা দফতরে গিয়ে ভিসা দেওয়ার কাজ করবেন। এটা আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্ন। ভিয়েনা চুক্তির প্রশ্ন। ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী আমাদের কূটনীতিক, দূতাবাসকে নিরাপত্তা দিতে হবে।’’ অন্য দেশের কূটনীতিক, দূতাবাস, নাগরিকদের হিংসার আশঙ্কার মুখে পড়তে হলে তাদের কী প্রতিক্রিয়া হত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জয়শঙ্কর।