শুরু থেকেই এই করিডরের বিরোধিতা করে এসেছে ভারত। —ফাইল চিত্র।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে অর্থনৈতিক করিডর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নিয়ে ফের চিনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাল ভারত সরকার। শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে তোলে চিন। তার প্রেক্ষিতে শনিবার বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে ওই অর্থনৈতিক করিডরকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে উল্লেখ করা হয়। বিদেশমন্ত্রকের কথায়, ‘‘আশাকরি বাকি দেশগুলি আমাদের সার্বভৌমিকতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানাবে এবং অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে বেআইনি ও তথাকথিত চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর নিয়ে গয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে না।’’
নিউইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৪তম সাধারণ সভার অধিবেশনে গত পাঁচ দিনে একাধিক রাষ্ট্রনেতা ও তাদের প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেছেন। তার মধ্যে শুধুমাত্র তুরস্কের রিসেপ তইপ এর্দোয়ান এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। ভারতকে ‘জব্দ’ করতে বরাবর পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখে এসেছে চিন। সেই রেশ বজায় রেখেই শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জে ওয়াং ই বলেন, ‘‘কাশ্মীর সমস্যা বহু দিন ধরেই অমীমাংসিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের দলিল, নিরাপত্তা পরিষদের নিয়মাবলী এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মেনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে এর সমাধান হওয়া উচিত। একতরফা পদক্ষেপে স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়, এমন কিছু করা একেবারেই উচিত নয়। ভারত এবং পাকিস্তানের প্রতিবেশি রাষ্ট্র হওয়ার সুবাদে চিন এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান এবং দুই দেশের মধ্যে স্থিতিশীল সম্পর্ক দেখতে চায়।’’
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে কোনও তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না বলে আগে একাধিক বার জানিয়েছে ভারত। তার পরেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্য করায় এ দিন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বেজিংয়ের তীব্র সমালোচনা করে বলা হয়, ‘জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভারতের এই অবস্থান সম্পর্কে ভাল ভাবেই অবগত চিন। সেখানকার সাম্প্রতিক ঘটনাবলী আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
আরও পড়ুন: ইমরানের বক্তৃতা প্ররোচনামূলক, ঘৃণায় ভরা, কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের
ওই বিবৃতিতেই চিন-পাকিস্তান করিডরকে বেআইনি বলে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘আশা করি বাকি দেশগুলিও আমাদের সার্বভৌমিকতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানাবে এবং অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে বেআইনি ও তথাকথিত চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর গড়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে না।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দেওয়া কে এই বিদিশা মৈত্র
গত ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে ভারত সরকার। জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়া হয়। তা নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি তুলে আসছে পাকিস্তান। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন জোগাড় করতে চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। তবে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া-সহ কোনও দেশই এখনও পর্যন্ত তাদের পাশে দাঁড়ায়নি।